বিশেষজ্ঞদের মতামত-
তবে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, ৩৫ বছর বা তারপর মা হবার পরিকল্পনা(Plan for Pregnancy) থাকলে, সে ক্ষেত্রে মহিলাদের নানান সমস্যা দিতে পারে, ফার্টিলিটির ওপর বয়সের প্রভাব প্রা অসম্ভব নয়। এ ছাড়াও গর্ভপাত, প্লাসেন্টা প্রিভিয়ায় সমস্যা, সময়ের আগে ডেলিভারি এবং ডাউন সিন্ড্রোমের(Down syndrome) মতো সমস্যার ঝুঁকি থেকে যেতে পারে। তাই যে সমস্ত মহিলারা দেরিতে সন্তানধারণের পরিকল্পনা করছেন বা করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ মানা উচিৎ। তাছাড়া বিশেষ কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকারও প্রয়োজনীয়তা র্যে
মা হওয়ার সঠিক বয়স(Best age for Becoming Mother)-
সঙ্গীর বয়সকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন-
সঙ্গীর বয়সকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন-
স্বভাবতই পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং ক্ষমতা কমতে থাকবে। তাই কেবলমাত্র মহিলাদের নিজের বয়সকেই মাথায় রাখলে হবে না, সেইসঙ্গে তার সঙ্গীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বসহকারে নজর দেওয়া প্রয়োজন। গর্ভধারণের জন্য মহিলাদের বয়স যতটা গুরুত্ব বহন করে, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গীর বয়সও। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শুধু মহিলাই নয়, বরং পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। তবে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার হার কম।
আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন-
কয়েক কয়েক সপ্তাহ স্বাভাবিক যৌন মিলনেই একজন মহিলা গর্ভধারণ হয়ে থাকি। দম্পতির বয়স যদি ৩০ বছর হয় এবং ৬ মাস যৌন মিলন ও চেষ্টা চালিয়েও গর্ভধারণ না ঘটলে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে মনের শক্তি আনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আমাদের সমাজে অনেক দম্পতি আছে যারা কোনভাবেই নিজের ঔরসজাত সন্তান সুখ পান নি। অর্থাৎ মা-বাবা হতে পারেন নি।
আবার দীর্ঘ বছর চিকিৎসার পর কেউ কেউ সন্তান লাভ করেছেন। অতএব শেষ পরিণতির কথা চিন্তা না করে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সমস্যার সমাধানে লিপ্ত থাকুন, এবং তার সমাধান করার চেষ্টা করতে থাকুন। পরিবার পরিকল্পনার আগেই আপনি ফার্টিলিটি স্ক্রিনিং করাতে পারেন। কোনও সমস্যা থাকলে তা প্রথমেই জানতে পারবেন এবং তার চিকিৎসাও শুরু হয়ে যাবে।
ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট(Fertility Treatment)-
ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট(Fertility Treatment)-
পুরুষের সমস্যা-
পুরুষের সমস্যা-
মহিলাদের সমস্যা-
মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। যেমন সঠিকভাবে ডিম তৈরি না হওয়া অথবা অপুষ্ট ডিম্বাণু। ফ্যালোপিয়ান টিউবের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়া অথবা ইউটেরাসে সঠিক ভাবে বেডিং না থাকা ইত্যাদি নানান কারণ। কখনো কখনো প্রজননতন্ত্রের কোন জায়গায় সিস্ট ইত্যাদি উপস্থিতির কারণেও গর্ভধারণ সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবে যাই হোক না কেন, স্বাভাবিক যৌন মিলনের 6 মাস বা একবছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্তই জরুরী। ৩৫ বছরের পর প্রেগনেন্সি প্ল্যান করে থাকলে, আগেভাগে জেনে রাখা দরকার যে, ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বয়সের সমস্ত সমস্যা দূর করা যায় না। তবে তাড়াতাড়ি সমস্যা ধরা পড়ে গেলে এই চিকিৎসা অধিক সফল হয়।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন প্রণালী-
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন প্রণালী-
কৃত্রিম প্রজনন-
কৃত্রিম প্রজনন-
স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণ না হলে ইনফার্টিলিটি স্পেশালিস্টদের সাহায্য নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন কৃত্রিম প্রজননে যাওয়া যায়। যেমন–
আই ইউ আই(IUI Treatment)-
আই ইউ আই- এর সম্পূর্ণ নাম Intrauterine insemination. যোনির যে জায়গায় ইন্সেমিনেশন হয় সেই স্থান থেকে ফ্যালোপিয়ান টিউবে প্রবেশ পথ সংকীর্ণ থাকলে ফার্মগুলো সেই সরু রাস্তা অনেক সময় অতিক্রম করতে পারে না। অথবা দুর্বল বা ক্ষমতাহীন হলে রাস্তা অতিক্রম করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এক্ষেত্রে IUI পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। যেদিন ইন্সেমিনেশন হবে সেদিনই সঙ্গী বা হাজবেন্ডের স্পার্ম আগে থেকে সংগ্রহ করা হয়। সিমেন সহ স্পার্ম ক্যাথিটারে মধ্যে সংগ্রহ করে ক্যাথীটার যোনির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে সিমেন ইঞ্জেক্ট করে দেওয়া হয় এবং পরের পিরিওড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আই ইউ আই এর(IUI) দিন লাস্ট পিরিয়ডের 10 থেকে 16-17 দিনের মধ্যে যেদিন ওভুলেশন হবে বা হবার সম্ভাবনা থাকে তার আগেরদিন IUI করা হয়ে থাকে। ওভুলেশন সম্ভাবনার দিনটি আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে ডিম্বাণুর ব্যাসের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য ওভুলেশনের দিন এবং হাই ইউ আই এর সফলতা মহিলা থেকে মহিলার মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে।
আইভিএফ(IVF and IVF Cost)-
আই ভি এফের(IVF) সম্পূর্ণ নাম ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন(In vitro fertilization)। যাকে আমরা এক কথায় টেস্টটিউব বলে থাকি। ভারতবর্ষের আইভিএফ(IVF) বা টেস্ট টিউব বেবি সৃষ্টির জনক হলেন ডঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ গবেষণার পর যিনি এক অতি আশ্চর্য এবং অভাবনীয় এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতির সাহায্যে। তার চিকিৎসার ফলে জন্ম দুর্গা(কানুপ্রিয়া আগারওয়াল, জন্ম- 03/10/1978)) ভারতের প্রথম টেস্টটিউব বেবি।
আইভিএফ এর জন্য মহিলাদের ডিম্বাণু আয়তনে বড় এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করার নিমিত্তে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। ডিমের সংখ্যা দুই বা ততোধিক হতে পারে। তবে মহিলা বিশেষে ডিমের সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। ডিমগুলি সংগ্রহ করে কৃত্রিমভবে টেস্টটিউবের মধ্যে স্পার্ম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে নিষিক্ত ডিম্বাণু মহিলার ইউটেরাসে স্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতি একটু খরচ সাপেক্ষ। মোটামুটি 90 হাজার থেকে 3.5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সেজন্য সকল দম্পতির ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
উল্লেখ্য পুরুষ-মহিলাদের শারীরিক গঠন ও স্বাস্থ্যের উপর এই পদ্ধতি সফলতা নির্ভর করে।
ইক্সি(ICSI)-
ICSI র সম্পূর্ণ নাম Intracytoplasmic Sperm Injection. এটি হল আইভিএফ- এর একটি বিশেষ রূপ, যা প্রাথমিকভাবে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিতসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ICSI একটি পরিপক্ক ডিম্বাণুতে সরাসরি কেবলমাত্র একটি পরিপক্ক শুক্রাণু ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়।
নারীর মা হওয়ার অনির্বচনীয় অনুভূতি সকল নারীই গ্রহণ করুন। সুখী হোন, খুশি থাকুন। ধন্যবাদ।