যদি কোন ইনকাম ট্যাক্স না থাকে অর্থাৎ আয়কর মুক্ত ভারত, তাহলে ভারতবর্ষের অর্থনীতি অবস্থা কিরূপ হবে?(If India has no income tax slab, what will be the impact on economy). ধারণাটা অলীক হলেও পৃথিবীর এমন কিছু কিছু দেশ রয়েছে যেখানে কোন ধরনের ইনকাম ট্যাক্স নেই। স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে সেই দেশের সরকার কিভাবে তার রেভিনিউ জেনারেট করে। অর্থাৎ কোন কোন উপায় ও উৎস থেকে সরকার করে আদায় করে এবং দেশের জনকল্যাণমূলক কাজ কর্ম চালিয়ে যায়। আসুন আজ এ বিষয়ে সামান্য আলোকপাত করা যাক।
প্রথমে জানি, আমাদের ভারতবর্ষ কোন কোন উৎস থেকে রেভিনিউ আদায় করে সরকারের অর্থনৈতিক ভান্ডার পূর্ণ করে। সেই অর্থ থেকে বিভিন্ন ধরনের জনকল্যান ও সেবামূলক কাজ কর্ম গুলো চালিয়ে যায়।
Source of Revenue of the Government-
এক কথায় উত্তর হবে ট্যাক্স। এই উত্তর শুনে সরকারি, বেসরকারি চাকুরীজীবী, বড়ো বড়ো ব্যবসাদার এবং উচ্চ রোজকার সম্পন্ন বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ বুক চওড়া হয়ে যায়। অর্থাৎ কেবলমাত্র তারাই ট্যাক্স দেয় ও রিটার্ন ফাইল করে-এই ভেবে। কিন্তু এই ভাবনার কিছু ত্রুটি আছে। তারা যে ট্যাক্স টুকু দেন সেটা হলো ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর। সারা ভারতবর্ষের মাত্র 2%-3% জনগন ইনকাম ট্যাক্স দেন। এ হিসাব অনুযায়ী দেখা গেছে যে 1.46 কোটি লোক ইনকাম ট্যাক্স দেন এবং তাদের সবার ট্যাক্সের পরিমাণ সমান নয়। তাহলে কি সরকার কেবলমাত্র ইনকাম ট্যাক্সের দ্বারাই চলে? এর উত্তর হবে অবশ্যই ‘না।’ তাহলে দেখে নেওয়া যাক সরকারের দ্বারা ধার্য করা ট্যাক্সের ধরন গুলি।
Types of Taxes-
সরকার জনগণের কাছ থেকে দুই ধরনের ট্যাক্স আদায় করে। যথা- 1.ডাইরেক্ট ট্যাক্স ও 2. ইনডাইরেক্ট ট্যাক্স।
Direct tax | প্রত্যক্ষ কর-
এই ধরনের ট্যাক্স একজন ব্যক্তি অথবা একটি কোম্পানি সরাসরি সরকারকে দিয়ে থাকেন। কর্পোরেট ট্যাক্স, ইনকাম ট্যাক্স, ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ইত্যাদি হলো ডাইরেক্ট ট্যাক্সের অধীনস্থ। এই ট্যাক্সের অধীনে দেশের সমস্ত নাগরিক পরেনা। অন্যদিকে ইনকাম ট্যাক্স যে সমস্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট স্ল্যাবের মধ্যে পড়েন তারাই ইনকাম ট্যাক্স দিতে বাধ্য থাকেন। বর্তমান আয়কর ধার্যের স্ল্যাব(income tax slab of A.Y- 2021-2022) 250000 টাকা। 250000 টাকা পর্যন্ত কোন আয়কর দিতে হবে না।250001-500000 পর্যন্ত 5% অর্থাৎ 12500 টাকা। তবে ট্যাক্সেবল ইনকাম 500000 টাকা পর্যন্ত হলে u/s-87 এ 12500 টাকা পর্যন্ত রিবেট আছে। তাছাড়াও পুরোনো নিয়মে গ্রস ইনকাম এর উপর 50 হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড়। কর্পোরেট ট্যাক্সের ক্ষেত্রে কর্পোরেট সংস্থা সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে থাকে।
Indirect tax | পরোক্ষ কর-
এ ধরনের ট্যাক্স কোন পণ্য এবং সেবামূলক কার্যের উপর ধার্য হয়। যেমন জিএসটি, ভ্যাট, এক্সাইজ ডিউটি ইত্যাদি। দেশের প্রতিটি নাগরিক এর অধীনেপড়ে। অর্থাৎ কোন একজন গরীব ব্যক্তি দোকান থেকে যেকোনো ধরনের দ্রব্য কিনলে তিনিও সে দ্রব্যের উপর ট্যাক্স দিতে বাধ্য থাকেন।
ওষুধ পত্র, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, মোবাইল ফোনের পরিষেবা পাওয়া ও ব্যবহার সমস্ত কিছুর ওপর সরকার নির্ধারিত ট্যাক্স দিতে প্রতিটি নাগরিক বাধ্য থাকেন।
অতএব যারা ইনকাম ট্যাক্স দেন তারা বলে থাকেন কেবলমাত্র তারাই দেশের সরকার চালানোর জন্য ট্যাক্স দিয়ে থাকেন- এ কথা সম্পূর্ণ সত্য নয়। বলতে পারেন তারা ডাইরেক্ট এবং ইনডাইরেক্ট উভয় ধরনের ট্যাক্সই দিয়ে থাকেন।
আবার এটাও ঠিক কিছু কিছু ব্যক্তিবর্গ আছেন যাদের রোজগার সাধারণ চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীদের তুলনায় অনেক বেশি। তারা আবার ইনকাম ট্যাক্স থেকে রেহাই পেয়ে যান মাত্র একটি কারণের জন্য। সেটা হল কৃষি থেকে উদ্ভূত আয়। কৃষি কাজ থেকে উদ্ভূত আয়কে ইনকাম ট্যাক্স এর আওতা থেকে কখনো কখনো বাদ দেওয়া হয়। এই নিয়ম অনুযায়ী 2011 সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতের প্রায় সাত লাখ কৃষক যাদের রোজগার ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাবের(greater than income tax slab) উর্ধ্বসীমা থেকে অনেক বেশি ছিল। তাদের সরকারকে কোন ধরনের ট্যাক্স দিতে হয়নি (SOURCE)।
If No Income Tax Slab or 0 Income Tax-
ভারতের অর্থনীতি থেকে যদি কোন ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাব না থাকে, অর্থাৎ যদি 0 ইনকাম ট্যাক্স হয় তাহলে দেশের পক্ষে কতটা এবং কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে?
এই প্রভাবকে আমরা দুটো বিভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করতে পারি। যথা-
দেশের পক্ষে হিতকর পরিস্থিতি-
1. প্রতিটি ব্যক্তির ইনকাম ট্যাক্স এর জন্য যে টাকা সরকারকে জমা দিচ্ছেন সেই টাকা দিয়ে আয়করদাতারা অন্য ধরনের খরচায় নিযুক্ত করতে পারবেন। এতেও সরকারের পক্ষে সেই দ্রব্যাদি অথবা সেবার উপর থেকে কর আদায় করতে পারবে। অর্থাৎ অর্থনীতিতে একটি ধনাত্মক ফলাফল পড়তে পারে।
2. যে সমস্ত ব্যক্তি ইনকাম ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার জন্য জন্য কালোটাকা হিসেবে বিভিন্ন অর্থ বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন স্থানে আবদ্ধ করে রাখেন, ইনকাম ট্যাক্সের বিষয়টি না থাকার জন্য, লুকোনো পদ্ধতিতে ব্ল্যাকমানি লুকিয়ে রাখবেন না। সরাসরি তা সাদা টাকায় পরিণত হবে এবং সেই টাকা তারা খোলাখুলি ব্যবহার করতে পারবেন। হয় তারা ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে পারবেন, অথবা অন্য কোন ক্ষেত্রে ইনভেস্ট করতে পারেন। পরোক্ষে তা সরকারেরই কোষাগার বৃদ্ধি পাওয়া পক্ষে সহায়ক হবে।
3. অন্যদিকে বলা যেতে পারে ইনকাম ট্যাক্স সংগ্ৰহ করার জন্য সরকার যে সমস্ত অর্গানাইজেশন, ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করছেন এবং সেই অরগানাইজেশন এবং ব্যবস্থাপনার জন্য যে পরিমাণ টাকা খরচা করছেন, সেই টাকা খরচা করার কোনো যুক্তি থাকে না। অর্থাৎ ডিপার্টমেন্টের লোক নিযুক্তি, ওয়েবসাইট তৈরি করা, ডকুমেন্টেশন করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য খরচা, সময় অপচয় এবং একাউন্টেন্টকে টাকা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ যে পরিমাণ টাকা ইনকাম ট্যাক্স পদ্ধতিকে সচল রাখার জন্য সরকার ব্যবহার বা খরচ করছে, সেই টাকা জনগণের কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে বর্তমানে ইনকাম ট্যাক্স এর ই-ফাইলিং-এর জন্য যে সাইটটি সরকার তৈরি করেছে, তার জন্য 2 হাজার কোটি টাকা খরচা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় এই ওয়েবসাইটটিকে সচল রাখার জন্য মেইনটেনেন্স বাবদ মাসে মাসে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।
Income Tax or no Income Tax Slab-এর জন্য বিরূপ প্রতিফল-
0 Income Tax or no Income Tax Slab চালু করার জন্য দেশের যে কেবলমাত্র মঙ্গলই হবে তা নয়। এর জন্য বিভিন্ন রকম বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যেমন-
সরকারি ভাবে এক বিপুল পরিমাণ রেভিনিউ এর উৎস বন্ধ হবে। যেখানে সরকার জিএসটি বাবদ 28.5 শতাংশ কর আদায় করে থাকে, সেখানে ইনকাম ট্যাক্স থেকে 28.3 শতাংশ, কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে 28.1 শতাংশ(Source)। তাছাড়াও অন্যান্য রেভিনিউ-এর ক্ষেত্রে এক্সাইজ ডিউটি থেকে 50%, কাস্টমস ডিউটি থেকে 5% আদায় হয়ে থাকে। ইনকাম ট্যাক্স থেকে রেভিনিউ এর পরিমাণ 28.3% হলে সেই পরিমাণ অর্থ আসবে কোথা থেকে?
এর জন্য আমাদের জানা প্রয়োজন বাকি অন্যান্য যে সমস্ত দেশ জিরো ইনকাম ট্যাক্স রয়েছে, সেই দেশগুলো কোন কোন খাত থেকে বা কোন উৎস থেকে রেভিনিউ আদায় করে থাকে।
পৃথিবীতে এমন কয়েকটি দেশ রয়েছে যেখানে ইনকাম ট্যাক্স নেই যেমন-
ইউ.এ.ই(UAE)-
সংযুক্ত আরব আমীরশাহি- দেশটিতে কোন পার্সোনাল ট্যাক্স বা কর্পোরেট ট্যাক্স নেই। তাহলে সরকার রেভিনিউ আদায় করে কোথা থেকে? ইউ.এ.ই-র একটা বড় সুবিধা এই যে, সে দেশের সরকার তেল কোম্পানি গুলোর কাছ থেকে সর্বোচ্চ 35 শতাংশ রেভিনিউ আদায় করে থাকে। তাছাড়া যে সমস্ত বিদেশী ব্যাংক ওই দেশে ব্যবসা করছে, তাদের কাছ থেকে 20 শতাংশ কর আদায় করে। তাছাড়া আছে এন্টারটেনমেন্ট ট্যাক্স এবং বিদেশ থেকে আনীত বিভিন্ন দ্রব্যের উপর ইমপোর্ট ডিউটি, যার সর্বোচ্চ পরিমাণ হচ্ছে 50 পার্সেন্ট। এই দেশের সরকার অ্যালকোহল বিক্রির উপর 30 পার্সেন্ট পর্যন্ত ট্যাক্স আদায় করে।
অর্থাৎ আমরা দেখছি ইউ.এ. ই সরকারের একটি বৃহৎ সোর্স অফ ইনকাম তেল কোম্পানির কাছ থেকে আসছে। কিন্তু এমন ঘটনাও ঘটতে পারে- যদি তেলের উৎপাদন কমে যায়। এই সমস্যা উদ্ভূত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে সে দেশের সরকার চেষ্টা করছে তাদের রেভিনিউ আদায়ের পদ্ধতিকে অন্য কোন ক্ষেত্রে স্থানান্তরিত করা যায় কি’না। এরজন্য 2018 সাল থেকে তারা বিভিন্ন দ্রব্যের উপর ভ্যাট চালু করেছে, যার পরিমাণ 5 পার্সেন্ট।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ-
মধ্যপ্রাচ্যের আরো 6 টি দেশ রয়েছে যারা তেলের উপরই নির্ভরশীল এবং সেখান থেকেই বিভিন্ন কর আদায় করার পদ্ধতি এখনো পর্যন্ত বলবত রেখেছে।
ইউরোপের দেশ-
ইউরোপের মোনাকো- যেখানে ধনী লোকের বসবাস। সেখানে জনসাধারণের উপর প্রপার্টি ট্যাক্স রয়েছে মাত্র 1 পার্সেন্ট। কিন্তু সে থেকেই সরকারের কাছে প্রচুর পরিমাণ রেভিনিউ জামা পড়ে। তবে এখানকার ভ্যাটের পার্সেন্টেজ খুবই বেশি। প্রায় 19.6 শতাংশ। এই কারণে এই দেশের জিনিসপত্রের দাম খুব বেশি। ভারতের পক্ষে এটি একটি অসম্ভব, অবাস্তব পন্থা হয়ে দাঁড়াবে।
বারমুডা’তেও কোন পার্সোনাল ট্যাক্স বা কর্পোরেট ট্যাক্স নেই। এবং সেখানে তেলও নেই। এদেশের সরকার বিভিন্ন দ্রব্যের উপর ইমপোর্ট ডিউটি প্রয়োগ করে। অর্থাৎ জিনিসপত্র আনলে ইম্পোর্ট ডিউটি প্রচুর পরিমানে দিতে হয়। এই রেভিনিউয়ের পরিমাণ প্রায় 20 শতাংশ। এইদেশে গাড়ির জন্য 150 শতাংশ, জমির জন্য প্রায় 47 শতাংশ।
এ দেশের এমপ্লয়ীদের স্যালারির উপর রয়েছে পে-রোল ট্যাক্স(Payroll Tax), যা ইনকাম ট্যাক্স এর মতই। কিন্তু পার্সোনাল ইনকাম ট্যাক্স সমস্ত ধরনের ইনকামের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পেরোল কেবলমাত্র চাকুরীজীবিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থাৎ বলা যেতে পারে ইনকাম ট্যাক্স কেবলমাত্র যারা চাকরি করেন তাদের উপরই প্রযোজ্য। চাকরিজীবী ছাড়া অন্যান্য মানুষজন অনিয়ন্ত্রিত হারে রোজগার করতে পারেন, তাতে তাদের কোন ট্যাক্স দিতে হয় না।
এখন প্রশ্ন হলো সরকারের রেভিনিউ কম হলে, সেই ঘাটতি পূরণ করবে কোন অংশ থেকে? হাইকোর্ট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন যদি অন্য কোন উৎস থেকে আদায় না হয় তাহলে সরকারের বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প, জনহিতকর কর্মসূচি, সর্বসাধারণের ব্যবহারযোগ্য সেবা ইত্যাদি সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অবশ্যই অন্য কোন সোর্স খুঁজতে হবে। ইনকাম ট্যাক্স জিরো পার্সেন্ট হয়ে গেলে, কোন কোন সোর্স আছে একটু দেখে নেওয়া যাক।
জিএসটি বৃদ্ধি-
জিনিসপত্রের উপর জিএসটি বৃদ্ধি করে সরকারের কোষাগার বৃদ্ধি করা যেতে পাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে মন্দ হতে বেশি সময় নেবে না।
জিএসটি বৃদ্ধির মন্দ প্রভাব-
জিএসটির সম্পূর্ণ নাম হল গুডস এন্ড সার্ভিস ট্যাক্স। অর্থাৎ প্রত্যেকটি দ্রব্য এবং সেবামূলক কাজের জন্য জিএসটি প্রয়োগ। এই দ্রব্যাদি এবং সেবা একজন সাধারন খেটে খাওয়া গরিব মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত প্রত্যেকটি নাগরিকের উপর লাগু হয়। অর্থাৎ জিনিসপত্রের এবং সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাবে, সে ক্ষেত্রে একজন গরিবের পক্ষে সে দ্রব্য বা সেবা নেওয়া সাংঘাতিক ভাবে দুরূহ কাজ হতে পারে।
জিএসটি বৃদ্ধির হিতকর প্রভাব-
জিএসটি বৃদ্ধির উল্টো ঘটনা ঘটতে পারে অর্থাৎ জিএসটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি না পেয়ে হ্রাস পেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে- পেট্রোপণ্যের উপর এখনো পর্যন্ত জিএসটি চালু হয়নি। জিএসটি চালু হলে পেট্রোপণ্যের মূল্য কমে যাবে। অন্যদিকে সরকারের আয় কম হতে বাধ্য। পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি চালু নেই, কিন্তু চালু আছে অন্যান্য নানান ধরনের ট্যাক্স। যার পরিমাণ ভারতে সর্বাধিক। ফলস্বরূপ পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি জনিত কারণে এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য এবং পরিষেবা মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইনহেরিটেন্স ট্যাক্স(Inheritance Tax)-
ইনহেরিটেন্স ট্যাক্স বা বংশানুক্রমিক ট্যাক্স ভারতবর্ষে অতীতে ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা নেই। ইনহেরিটেন্স ট্যাক্স কি? ঠাকুরদা, বাবার অর্থ সম্পত্তি ইত্যাদি ছেলের হাতে হস্তান্তরিত হলে তাদের হস্তান্তরিত অর্থ এবং সম্পত্তির উপর ট্যাক্স লাগানো যেতে পারে। এটা প্রয়োগ করার পেছনে যুক্তি এই যে, যে ব্যক্তি দাদু বা তার বাবার কাছ থেকে অর্থ বা সম্পত্তির পাচ্ছেন, তিনি কিন্তু সে অর্থ-সম্পত্তি নিজের পরিশ্রমে উপার্জন করছেন না। বিনা পরিশ্রমে বংশানুক্রমিকভাবে তার পূর্বসূরিদের অর্থ এবং সম্পত্তি ভোগ দখল করবেন। সেই হিসেবে তার সম্পত্তি এবং অর্থের উপরে ট্যাক্স বসানো যেতে পারে।
একজন ব্যক্তির সেলারি বা তার কায়িক পরিশ্রম দ্বারা রোজগারের টাকার উপর এই কারণে ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ হওয়া উচিত। অনেক ব্যক্তিবর্গ এই ধরনের ট্যাক্স বসানোকে অন্যায় আখ্যা দিয়ে থাকেন। সেই ব্যক্তির উপার্জনের পরিমাণ বেশি হলে এবং সেই ব্যক্তি যদি তার সারা জীবনে সেই অর্থ বা সম্পত্তি খরচ করতে না পারেন বা ভোগ করতে না পারেন, অবশ্যই সেই অর্থ বা সম্পত্তি তার পুত্র বা নাতিনাতনীর উপর হস্তান্তরিত হবে। তখন এই হস্তান্তরিত অর্থের ওপর বা সম্পত্তির উপর ট্যাক্স ইনহেরিটেন্স হিসেবে নাতি-নাতনির কাছ থেকে নেওয়া যেতে পারে।
উপসংহার-
কিন্তু আমাদের কথা’ই শেষ কথা নয়। সবকিছুই সরকারের আইন এবং সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। শুধু সরকারই নয়, জনগণের মতামতের ওপরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সত্যি সত্যি ইনকাম ট্যাক্স বা নো ইনকাম ট্যাক্স স্ল্যাব হওয়া উচিত, কি উচিত নয়।
আপনাদের যদি ব্যক্তিগত কোন মতামত থাকলে ইনবক্সে কমেন্ট করে লিখে পাঠান। ধন্যবাদ।