Women’s Role in Society till 2024 in Bengali | ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান

বর্তমান ভারতীয় সমাজে মহিলাদের বহুমুখী ভূমিকা (At present India women’s role in society) সম্পর্কে আজকের আলোকপাত-এর বিষয়। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান ভারতের সমাজে মহিলাদের উপযুক্ত সম্মান এবং নিরাপত্তার বিষয়ে সম্যক ধারণা সকলেরই আছে। সমাজে মহিলাদের বহুমুখী ভূমিকার (At present India women’s role in society) ধারণা আমাদের মনের মধ্যে অবস্থান করলেই তাদের প্রতি বিরূপ মন্তব্য বা ধারণা গুলি পাল্টানো যাবে কিনা বলা মুশকিল। স্বতঃস্ফুর্ত মানবিকতা, সামাজিক বোধের মধ্যে দিয়েই এই আচরণ পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরী।

মহিলাদের বহুমুখী ভূমিকার(women’s role in society) মধ্যে যে সমস্ত সম্পর্কগুলি আমরা দেখতে পাই, যেমন- কন্যা, স্ত্রী, মা, কাকিমা, বোন, বৌদি ইত্যাদি যেকোনো হোক না কেন, প্রত্যেকেই আমাদের সমাজের বিশেষ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এর মধ্যেই পরিচালিত হয় একটি পরিবার এবং সেইসঙ্গে একটি সমাজ।

Women’s role in society at Present Situation | ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান

Women’s role in society বিষয়ে মহিলারা আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে কোন কোন ভূমিকা পালন করে? কিছু মহিলা সম্পর্ককে খুঁজে নিয়ে আলোচনা করলে, তা সহজে নির্ধারণ করতে সুবিধা হবে।

কন্যা হিসেবে | Women’s Role as a Daughter –

Daughter

হ্যাঁ বাবা ও কন্যার সম্পর্ক এক সুমধুর সম্পর্কে বহন করে। কন্যারা বাবার কাছে বেশ আদরের ও  স্নেহের‌। বাবার, ছেলে তুলনায় মেয়েকে বেশি আদর দেয় বলে সামাজিক ধারণা হয়ে আসছে। তবে এ নিয়ে মতান্তরও কম নেই। তবে পরিবার ও জীবনযাপন ধরন বা জীবনশৈলীর উপরে সম্পর্ক নির্ভর করে বলে আমার মনে হয়।

তবে বাবার কাছে কন্যা এক ভরসা, এক শীতল আশ্রয়। স্নেহের সুমধুর মাধুর্য ছোট বয়সে কন্যার ছোট ছোট পায়ের আনাগোনা, চলাফেরা, মিষ্টি আধো আধো কথা, বাবার বুক জুড়ে এক আত্মতৃপ্তির গরিমার প্রকাশ। সেই কন্যাই আবার ধীরে ধীরে কখন যে বাবার কাছে মাতৃরূপ অবতীর্ণ হয়ে এক অবলম্বন হয়ে প্রাচীরের মতো আবরণ তৈরি করে। কন্যার এই বহুমুখী রূপ আমাদের সমাজে অপূর্ব এক সুখানুভূতির সৃষ্টি করে।

বোন বা দিদি হিসেবে(As Sister)-

বোন বা দিদি হলো ভাইবোনদের মধ্যে মধুর এক সামাজিক সম্পর্ক। একই মায়ের পেটে যেমন ছেলে মেয়ে জন্মালে ভাই বোনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হয়, তেমনি ভিন্ন মায়ের গর্ভে ছেলে মেয়ে জন্মালেও তৈরি হয় এমন মধুর সম্পর্ক। খুড়তুতো, জেঠতুতো, মামাতো ইত্যাদি তুতো সম্পর্কের মধ্যে প্রবাহিত হয় এই শীতল স্রোত। সুমধুর এক মিষ্টি ভালোবাসার স্রোতে আমাদের চিরাচরিত এক প্রাচীন ঐতিহ্য পূর্ণ সম্পর্ক সূচীর হয়ে আসছে। সম্পর্কের এমন এক মজবুত নির্মাণ তৈরি করে যে ভাই বোন একে অপরের কাছে ঢালের মতো দাঁড়িয়ে জীবন যাপন রক্ষাকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে।

এই সম্পর্কের জোরে এক সামাজিক উৎসব ভাইফোঁটা– আত্মিক, সেন্টিমেন্টাল সামাজিক উৎসব। বাংলা সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে উৎসব কালীপুজোর ঠিক শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়াতে পালিত হয় এই উৎসব। ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার উৎসবের মধ্যে চন্দনের ফোঁটার মাধ্যমে বয়সে ভাই অথবা বোন পারস্পরিক আশীর্বাদ দেয় আর থাকে সামর্থ্য অনুযায়ী খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন।

ভাই-বোনদের মধ্যে দীর্ঘ বয়সের পার্থক্য হলে দাদা অনেক সময় বাবার ভূমিকা পালন করে আবার দিদির সঙ্গে ভাই বোনের বয়সের পার্থক্য বেশি হলে সেই দিদিকে মাতৃ সম্পর্কে অবহিত অবতীর্ণ হতে দেখা যায়। এই সামাজিক রীতি কেউ কাউকে শেখায় না। স্বাভাবিক নিয়মে সমাজে নেমে আসে। এর মধ্যে কোনো জাত নেই, তথাকথিত ধর্ম নেই, নেই কোনো স্বার্থপরতার চাওয়া-পাওয়ার অভিলাষ।

স্ত্রী হিসাবে | women’s role as a wife-

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশে প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আসছে। তবে ভিন্ন সমাজ ও দেশে বিবাহবন্ধনের নিয়মাবলীর হয়তো পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক পুরুষ-নারীর মধ্যে এক আইনি, অন্যদিকে সামাজিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে এই সম্পর্কে বৈধতা দেয়।

তবে বৈধ-অবৈধ নারী-পুরুষের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কিন্তু সমাজ স্থান-কাল ভেতে ভিন্নতা রয়েছে। বেশিরভাগ সমাজে কিন্তু এক গামি সম্পর্ককেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে পাশ্চাত্য দেশে সমাজ-সংস্কৃতি নারী-পুরুষের সম্পর্কের তাৎপর্য ভিন্ন, যা প্রাচ্যের দেশের সাথে অমিল থেকে যায়।

সমাজে স্ত্রী হিসেবে নারীর ভূমিকায় ভারতীয় সমাজে বেস্ট বৈচিত্র্য রয়েছে। এই বৈচিত্র কখনো কখনো নারীর পক্ষে যায়, স্বাভাবিক সামাজিক নিয়ম বলে অনেকে যুগের পর যুগ মেনে নেয়। আবার আধুনিক, স্বাধীন সামাজিক বাতাবরণে স্ত্রীর ভূমিকা অবমাননামূলক বলে মনে হয় বলে অনেকে বিশ্বাস। অর্থাৎ স্ত্রী হিসেবে নারীর ভূমিকা সম্মান না অপমানের এ নিয়ে বিতর্কে শেষ নেই। সে পরিবারের কাজকর্মের মধ্যেই হোক, সামাজিক কাজকর্মের মধ্যেই হোক বা শারীরিক যৌন সম্পর্কের মধ্যেই হোক। সম্মান আর অসম্মানের বিতণ্ডা থেকেই যায়।

জীব হিসেবে মানুষের এক সহজাত জৈবিক বৈশিষ্ট্য হলো যৌন সম্পর্ক(Sex life relationship)। অন্য দিকে মানুষ সামাজিক জীব, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব, সামাজিক জীব হিসেবে যৌন সম্পর্কের মধ্যে মানুষ সেই প্রাচীনকাল থেকে এক নির্দিষ্ট গণ্ডি এঁকে দিয়েছে। এই যৌন সম্পর্কের(Sex relation) গণ্ডি কিছু কিছু সমাজ ও দেশের ভিন্নতা থাকলেও প্রায় একই রকম। যৌন মিলনের জৈবিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ কেবলমাত্র স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছে মানুষ। এবং এটা মনুষ্যসমাজ বৈধতা দিয়েছে। অর্থাৎ অন্য কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্ক সমাজ মেনে নয় না। কিন্তু পুরুষ-মহিলা পরস্পরের সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক হলে বর্তমানে আইন দ্বারা স্বীকৃত হচ্ছে।

পুরুষ হিসেবে স্বামীর যেমন যৌন মিলনের আকাঙ্খায় আছে, তেমনি নারী হিসেবে স্ত্রীর একই চাহিদা প্রকাশ ঘটে। আর এভাবেই জীবের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য প্রজনন ধারা বয়ে চলেছে পৃথিবীতে।

বৌমা হিসাবে(As Daughter-in-law)-

প্রত্যেক বাবা-মা’কে তাদের পুত্রের বিবাহ দিতে হয়। বাবা-মা’দের বাবা-মা’রাও তাদের বিবাহ দিয়েছেন। অতএব বাবা-মা’রাও তাদের পুত্রের বিবাহ দিয়ে বৌমা আনার স্বপ্ন দেখবেন- এটাই স্বাভাবিক।

এখন বাইরে থেকে যে মেয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে আসবে, তার ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সে নারী একদিকে ওই বাড়ির ছেলের স্ত্রী। অন্যদিকে অন্য ছেলে মেয়ের বৌদি(sister-in-law)। আর তার স্বামীর বাবার কাছে বৌমা বা এর থেকেও আরও বেশি সম্পর্ক তৈরী হতে পারে। নারীর বহুমুখী বিচিত্র সম্পর্ক(Multipurpose women’s role in society created)  তৈরি হয় নতুন বাড়িতে।

সে এখন বৌমা হিসেবে তার স্বামীর বাবা-মায়ের সাথে যে সম্পর্ক অবতীর্ণ হয়, তার যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একদিকে শ্বশুর বাড়ির সমস্ত সদস্যরা যেমন বাড়িটাকে মজবুত সম্পর্কের বন্ধন বাঁধার জন্য দায়ী থাকে। তেমনি বউ হিসেবে সেই নারীর কিন্তু একই ভূমিকা পালন করতে হয়। সে নারীকে বুঝতে হয় তার স্বামীর বাবা মা অর্থে তারো বাবা-মা। সেই নারীর নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে যে সুমধুর সম্পর্কে আবদ্ধ, শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে সেই সম্পর্কের ভিত তৈরি করতে হয়।

আমাদের সমাজ ও পরিবার সেভাবে একজন কন্যাকে সেইভাবে বড় করে তোলে। পাশ্চাত্য সমাজে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার পর নারীকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গ ছেড়ে স্বামীর কাছে থাকতে হয়। স্বামী কখনও স্ত্রীর বাবার বাড়িতে থাকে না। যেটা চিরাচরিত সামাজিক প্রথা।

বৌমা হিসেবে শ্বশুর-শাশুড়ির ভালো-মন্দ, সেবা-যত্ন, অভাব-অভিযোগের দায়িত্ব সেই নারীকে গ্রহণ করতে হয়। খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে শরীর অসুস্থের সময় ওষুধপত্র ইত্যাদি পরিবেশন, সব দায়িত্ব তোমার উপর। অবশ্য পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে সেই নারীর শ্বশুরবাড়ি। অথবা শ্বশুর-শাশুড়ির ভবিষ্যৎ জীবন।

মা হিসেবে | Women’s role as Mother-

mother

জীব হিসেবে মানুষ আর মানুষ হিসেবে নিজেকে ভবিষ্যতের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য যে বৈশিষ্ট্যকে হাতিয়ার করে তা হল প্রজনন। প্রজননের জন্য প্রয়োজন নারী-পুরুষ উভয়কেই।  প্রয়োজন যৌন মিলন। সেই সম্পর্কে ধারাকে প্রবাহমান কাল থেকে মানুষ বয়ে চলেছে বিবাহ নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

যৌন মিলনের পর নারীর শরীরে রোপিত হয় অপত্য কোষ। গর্ভধারণের মাধ্যমে আগামী প্রজন্ম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি লাভ করে। জন্ম নেয় শিশু। নারী মা’তে পরিণত হয়। সে এক রোমাঞ্চকর অনুভূতিতে নারী অবগাহন করে। সামাজিকভাবে বললে বলা হয় নারী সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় মাতৃরূপে। যে যতই আলট্রা মডার্ন  হোক না কেন, মনের সুপ্ত বাসনা মা হওয়া। মাতৃরূপ অস্বাদন নারীর এক অন্যতম অনুভব।

অন্যান্য জীবেরা যেরকম তার সন্তানের প্রতি স্নেহ ভালোবাসা প্রকৃতির এক অনন্য অনুভূতির প্রকাশ ঘটায়,  নারীর হিসাবে মানুষও সে সুখানুভূতি থেকে বঞ্চিত হবার সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করার চেষ্টায় আবদ্ধ হয়।

মা হিসেবে সন্তানের প্রতি আদর, ভালোবাসা, স্নেহ, প্রীতির সঙ্গে থাকে তার অভাব-অভিযোগের খবরা-খবর। জন্মের সময় থেকে শিশুর আচরণের বহিঃপ্রকাশ, শিশুর সমস্যাকে জানা এবং তার সমাধান করা, তার খিদে তার অসুখ, তার চাহিদা পূরণে মা হিসেবে সে নারীকেই নিতে হয়।

আবার বয়স হবার সাথে সাথে সেই শিশুর শিক্ষাদীক্ষা পড়াশোনার দায়িত্ব, তার জীবন যাপন, জীবনশৈলী, সামাজিকতার শিক্ষা মা হিসাবে নারীর উপর দিয়েই বর্তায়।  শৈশব, কৈশোর, তরুণ, যৌবন এবং তার সামাজিক প্রতিষ্ঠা মা হিসেবে নারীর ভূমিকাকে কখনোই অস্বীকার করতে পারি না। যদিও সব ক্ষেত্রে দায়িত্বভার মা’কে নিতে হয় এমন নয়, কিন্তু মায়ের ভূমিকার গুরুত্ব অস্বীকার করার মত সাধ্য আমাদের নেই। আর অস্বীকার করার কথা ভাবা উচিত নয়। সন্তানের সামাজিক আচরণের বেশিরভাগ পরিস্ফুটন কিন্তু মা’র আচরণ থেকে প্রকাশিত হয়।

আমাদের পরিবার ও সমাজ যে মা হিসেবে নারীর অপরিসীম গুরুত্ব ও ভূমিকাকে, ভূমিকার সত্যকে সমাজ ও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান কখনো অবহেলা করে না। আর ভবিষ্যতেও করবে না।

পারিবারিক ম্যানেজার(As Manager of a Family)

একজন মহিলা একটি পরিবারের ম্যানেজারের ভূমিকা অবতীর্ণ হন। বাড়ির মেয়ে হোক বা মা বা বৌমা বা অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা মহিলা হোক।  বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বুদ্ধি ও ম্যানেজমেন্টের বা পরিচালনার ভূমিকা সামান্য দেখা দিলে, বাড়ির বয়স্ক সদস্য ওই মহিলার উপর বাড়ির সমস্ত দায়িত্ব দিয়ে নিজেরা স্বস্তিতে থাকতে পারেন। আসলে থাকতে চান। কেননা এটা পারিবারিক রীতি। নতুন আসার সাথে সাথে পুরনোদের বিদায় নিতে হয়।

একজন মহিলা পরিবারের সাংসারিক সমস্ত কাজকর্ম- ভাঁড়ার ঘরের দায়িত্ব থেকে, কোন সদস্যকে কোন কাজটা দিলে কর্মসম্পাদন সহজ এবং সাফল্যের সঙ্গে, বিশেষ করে সেই পরিবারের পক্ষে উত্তম ও উপযুক্ত হবে তা বেশ ভালোভাবে বুঝতে পারে। কাজ করার সাথে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়। ভবিষ্যৎ সমস্যাগুলি সমাধানের রাস্তা তৈরি আরো সহজতর হয়।

বাড়িতে নতুন বউ আসার সাথে সাথে শশুর শাশুড়ি বৌমার হাতে বাড়ির চাবি তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হন। এ বাংলা তথা ভারতের এক চিরাচরিত ঐতিহ্য। সেই বৌমা শুধু রান্না করাই নয়, অন্যান্য সমস্যাযুক্ত ম্যানেজারিয়াল কাজকর্ম বেশ ভালোভাবে সামলান। যেমন পরিবারের কারো শরীর অসুস্থতা, অতিথি আপ্যায়ন, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা বা বাড়ির রূপসজ্জার ব্যাপারে বাড়ির মহিলারা এগিয়ে আসেন। 

কিছু কিছু ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত থাকলেও সামগ্রিক চিত্র থেকে এই ম্যানেজারের কাজটাকে সুচারুভাবে পরিচালিত হতে দেখা যায়। এক দায়িত্বপূর্ণ পারিবারিক কার্যসম্পাদন বৃহত্তর অর্থে সামাজিক কাজের অংশ।

একজন কর্মী হিসেবে(As an Employee)-

বর্তমানে মহিলারা আর বাড়ির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সাংসারিক কাজকর্মের বাইরে তারা এক দৃঢ় মানসিক সত্তার মধ্যে অতিবাহিত হন। সেই সত্তার মধ্যে অবস্থান করে স্বাধীনভাবে কর্মে নিযুক্ত হবার প্রয়াস। সরকারি-বেসরকারিভাবে কর্মে নিযুক্ত হওয়ার অভিলাষী বর্তমান প্রজন্মের নারীর মধ্যে বিকশিত হচ্ছে ও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান

অর্থ স্বাধীনতা না হলে নিজে স্বাধীন হওয়া যায় না। এই ধারণা নারীদের মধ্যে ক্রমশ দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে। বিদ্যালয় স্তর থেকে ছোট-বড় নানান সংস্থায় মহিলাদের নিয়োগ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেরকম মহিলারাও কর্মে নিযুক্তির সংকল্প নিয়ে বিভিন্ন সংস্থায় যোগদান করছেন।

পুরুষরা যে ভাবে কাজ সমাধান করছেন, কখনো মহিলারা তার তুলনায় কোন অংশেই কম নয়। বর্তমানে সেনাবাহিনী, এয়ার ফোর্স, নেভিতে মহিলাদের নিযুক্ত হওয়ার পথ পরিষ্কার হয়েছে।

তাই বলা যেতে পারে একজন কর্মী হিসেবে মহিলারাও সমাজের সর্বত্র সমানভাবে পারদর্শিতার অর্জন করছেন। চাকরি না পেলেও আত্মনির্ভরশীল(self-sufficient/self-employment) কর্মী হিসেবে বিভিন্ন কর্মসম্পাদনে যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ রোজগার ও নিজের পরিশ্রমে হাতে অর্থ আনয়নের প্রয়াস মেয়েদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।

একজন প্রশাসনিক হিসাবে(As an Administrator)-

এ এক অনন্য পদ। এতদিন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কবল পুরুষদের প্রাধান্য ছিল। বর্তমানে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের ফলে মহিলাদেরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক পদে অধিষ্ঠিত হতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার ম্যানেজার, বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় এর প্রধান, থানার ইনচার্জ এবং অন্যান্য আরো উচ্চপদস্থ মহিলা কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি আধুনিক সমাজে এক আশার আলো।

রাজনৈতিক দলের নেত্রী থেকে সংসদে আসা, অন্যদিকে সেই দলের দলনেত্রী রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বা দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির পদও অলঙ্কিত করছেন।

এক অনন্য বহুমুখী প্রতিভা(A unique Multi Talent Women’s role in Society)

এই ভূমিকা গুলো ছাড়াও আরো যে কত ভূমিকা বর্তমান নারী দ্বারা সমাপিত হয় তা বলে শেষ করা যাবে না। উপরে বিভিন্ন ভূমিকা গুলি বর্তমান মহিলা মহলে এক অনন্য আচরিত পদ্। ভারতে প্রাচীনকাল থেকে মহিলারা সমাজ, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসেছে। কিন্তু তুলনায় অনেক কম সংখ্যক ভূমিকা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আগামী দিনে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।

এক নারীর মধ্যে দেখা যায় তার বিভিন্ন রূপ(We see a glorious Multitalented Women’ role in society)। সামাজিক প্রতিষ্ঠানে কাজ কর্ম দক্ষতার সাথে সমাপন করার পর, সাংসারিক কাজ কর্মে নিয়োগ বিরাট কৃতিত্বের দাবিদার। পুরুষদের ক্ষেত্রে এরকম ভূমিকা দেখা যায় না। বাইরের প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির কাজ সম্পন্ন করার পর ফিরে এসে রান্নাবান্নার কাজ করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু মহিলাদের ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই বিষয়ে আমাদের সকলের তাদের প্রতি সম্মান,শ্রদ্ধায় মাথা নিচু করা উচিত। আগামী ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান ও তাদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমে এক নতুন সমাজের আশা নিয়ে শেষ করছি।

মাতৃদিবসে শ্রদ্ধা, যারা মা হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।

ধন্যবাদ। মতামত কাম্য। আপনার মন্তব্য ইনবক্সে লিখুন।

Leave a Comment