When is Teacher’s Day 2023 in Bengali | শিক্ষক দিবস 2023 ও সমাজ সংকট । A Painful Crises/Crisis

শিক্ষক দিবস 2023(Teacher’s Day 2023) নিঃসন্দেহে ভালোলাগা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, সম্মানের দিন। অবশ্য শুধু একদিনের জন্য নয়, প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তেই আচরণগুলোকে নতুন করে পালন, সংকল্প নেওয়ার দিন। কোন বোঝা নয়, এ এক সহজাত স্বভাব ও স্বতস্ফূর্ততার বহিঃপ্রকাশের স্বাভাবিক প্রতিজ্ঞা।

Teacher's Day 2023

কেন শিক্ষক দিবস?(Why Teacher’s Day?)

শিক্ষক দিবস কি? কেন? এবং কবে শিক্ষক দিবস 2023(When is Teacher’s Day 2023) এ সবার জানা। সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন 5 ই সেপ্টেম্বর (1888)। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, শিক্ষক, দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি, দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি। তার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক দিবসের সূচনা‌ এবং বর্তমান কাল পর্যন্ত তা প্রবহমান। 1962 সালে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হলে তার ছাত্রছাত্রীরা 5ইসেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার জন্য আবেদন জানান। তাদের আবেদনে সারাদিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে অনুমতি আসে 5ই সেপ্টেম্বরকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার।

একদিকে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণেরর জন্মদিন, অন্যদিকে শিক্ষক দিবস। মানুষ কোন বিষয়টা নিয়ে 5ই সেপ্টেম্বর উদযাপন করবে? এ বড় দ্বিধায় ফেলে। এতদিন পর্যন্ত দেখা গেছে এবং আগামীতেও হয়তো যাবে- স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ও নানান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 5ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উদযাপনে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিনটাই বেশি করে বারবার উচ্চারিত হয়‌। একমাত্র তার ছবিই টেবিলে সাজানো থাকে। অনেকের মত আমার প্রশ্ন তাঁর ছবির সাথে অন্যান্য মহান শিক্ষক ও মহাপুরুষদের ছবি টেবিলে স্থান পায় না কেন?

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিন। তার ছবি অবশ্যই থাকবে। কিন্তু দিনটা শিক্ষক দিবস‌ অন্যান্য শিক্ষকদের ছবি থাকবে না? মহান শিক্ষকদের সম্মান জানানো, তা ভুল বা অন্যায়?

শিক্ষক দিবস 2023- এ আমাদের প্রতিজ্ঞা | Promise on Teacher’s Day 2023

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষকদের, গৃহশিক্ষকদের ছাত্রছাত্রীরা এদিন নানান উপহার, ফুলের তোড়া, মিষ্টি, স্মারক ইত্যাদিতে ভরিয়ে দেয়। তাদের মনে স্বতস্ফূর্ত, ভক্তি-শ্রদ্ধারই বহিঃপ্রকাশ। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ না হোক, ঝড়ে পড়ুক সারা বছরই। চলুক আবেগের বন্যা। কোন উপহার নয়, নয় কোন মিষ্টি, স্মারকও নয়, কেবল আন্তরিক ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, বন্ধুত্ব থাকুক অটুট। সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হোক। শিক্ষা নামক আচরণ পরিবর্তনকারী মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধির সাথে মানবিক হয়ে উঠুক সমাজ।

বিদ্যাসাগর, রামমোহন, অরবিন্দ, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজীর ছবি রাখলে কি রাধাকৃষ্ণন কে অবমাননা করা হবে? এ নিয়ে অনেকের দু’ভাগে বিভক্ত। এ প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক‌। আমি একবার এক শিক্ষককে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বলেছেন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণের জন্মদিনটাই প্রধান। তাই অন্য জনের ছবি রাখা ঠিক না। আমি বললাম দিনটা তো শিক্ষক দিবস। কখনোই তো বলা হয় না রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন পালন। হ্যাঁ তার জন্মদিনটাই শিক্ষক দিবস। তাহলে তার জন্মদিনের সাথে অন্যান্য শিক্ষকদের স্মরণ করা যাবে না- এটা মেনে নিতে পারিনি। যেখানে বর্তমান শিক্ষকদের তাদের ছাত্র ছাত্রীরা এই দিনে বিশেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে, সেখানে ভারতীয় শিক্ষায় পরিবর্তনকারী মহাপুরুষদের সম্মাননা জানাবো না?

হুগলি গভমেন্ট ট্রেনিং কলেজ। মাননীয় অধ্যাপক বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বললেন- শিক্ষক দিবসে আমাদের শিক্ষায় ইতিহাস সৃষ্টিকারী মহাপুরুষদের স্মরণ করা হবে। যাদের অবদান বাঙালি তথা ভারতবাসী কখনো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অস্বীকার করতে পারে না। তিনি বলেছিলেন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের সাথে সাথেই প্রফুল্ল রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজী সহ অন্যান্য মহাপুরুষদেরও স্মরণ আবশ্যিক। আমরা (Session- 2011-12) সেভাবেই শিক্ষক দিবস পালন করেছিলাম।

শিক্ষক দিবস ও সমাজ সংকট(Teacher’s Day and Social Crises)-

 সম্মান শ্রদ্ধা যেমন জোড় করে আদায় করা যায় না, অন্যদিকে স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা সম্মান জ্ঞাপনকে কোনো তৃতীয় শক্তি বাধা দিয়ে অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে না। এখন প্রশ্ন হলো- বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক ও শিক্ষকদের অন্তর্হিত সম্পর্ক গড়ে ওঠা সেতুবন্ধনের বর্তমান পরিস্থিতি কি?

পূর্বতন শিক্ষক ও সমাজ-

প্রচলিত একটি হাস্যরসাত্মক চুটকি মনে পড়ে গেল। এক শিক্ষক কোন বাড়িতে কড়া নাড়লেন। বাড়ির ভেতর থেকে আওয়াজ এল- ‘কে?’ কড়ানাড়া ব্যক্তি বললেন- ‘আমি অমুক মাস্টার।’ ভেতর থেকে দরজা খুলে বাড়িওয়ালা বললেন- অ, আপনি? আমি ভাবলাম কোন ভদ্রলোক বুঝি।’ উনি শিক্ষক তাই ভদ্রলোক নয়। অথবা বলা যেতে পারে শিক্ষক ছাড়া বাকি সকল মানুষই ভদ্র।

এ হলো প্রচলিত চুটকি গল্প। এর সঙ্গে বর্তমান বাস্তবের সম্পর্ক মেলে না। যদিও এ ধরনের গল্পগুলি বাস্তব থেকে উঠে আসে। কিভাবে? আমাদের সমাজে মান সম্মান, মর্যাদা অনেকটা অর্থনৈতিক সম্পর্কের সাথে জড়িত। পূর্বতন শিক্ষক মহাশয়রা যে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে অস্বচ্ছল জীবনযাপন করতেন, বলা যেতে পারে দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থা। সেই ছাপ তাদের জীবনশৈলীর পরতে পরতে প্রকাশিত হতো। সমাজের সচ্ছল ও অর্থ সাচ্ছন্দ ব্যক্তিদের তাদের প্রতি করুণা বর্ষণও অস্বাভাবিক ছিল না। সেইসঙ্গে ওই ধরনের ‘ভদ্রলোক’ ভাবনার মানসিকতা স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসত। কিন্তু শিক্ষকদের আদর্শ, মূল্যবোধ, ন্যায়পরায়নতা ইত্যাদি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য গুলি এরমধ্যে সর্বদা বিরাজমান ছিল। তাইতো আমরা কথায় কথায় বলে থাকি অমুক শিক্ষকের মত শিক্ষক আর কাউকে হতে হবে না। ঐরকম আদর্শ শিক্ষক আজকাল আর দেখা যায় না।

Embed from Getty Images

বর্তমান শিক্ষক ও সমাজ-

তাহলে কি বর্তমান শিক্ষক সমাজে আদর্শ, মূল্যবোধের অভাব আছে? সমাজ নিজে নিজে কিছু বিষয়কে কিছু বিশেষ মানুষ বা সমাজের জন্য স্থির(Static), আবার ওই বিষয়গুলিকে অন্য মানুষ বা সমাজের জন্য চলমান(Dynamic) করে নেয়। যেমন আমরা বলতে শুনি- শিক্ষকতারপেশা হলো এক মহান পেশা, এক অন্য ধরনের পেশা। এ হলো আমাদের স্ট্যাটিক ধারণা। অর্থাৎ শিক্ষকের সঙ্গে মহান, আদর্শ ও মূল্যবোধ ন্যায়পরায়নতা ইত্যাদি বিষয়গুলো জুড়ে যায়। খুব ভালো কথা। এ নিয়ে কোন বিতর্ক থাকার কথা নয়।

কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়। তাহলে কি বাকি পেশাগুলির মধ্যে কোন আদর্শ ও মূল্যবোধ ন্যায়পরায়নতা নেই? সমাজ অন্য পেশা গুলির প্রতি বিরূপ তাচ্ছিল্য অনাদর্শ অশ্রদ্ধা ইত্যাদির সাথে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে সেইপেশাদার মানুষগুলি থেকেও সমাজের প্রতি তাচ্ছিল্য, কর্তব্য গর্হিত বান নিক্ষেপ অস্বাভাবিক নয়। অন্যদিকে ওই পেশার(শিক্ষক বাদ দিয়ে) সাথে যুক্ত পেশাদারদের সমাজ  ই বাধ্য করছে মূল্যবোধহীন, অনাদর্শ ও কর্তব্যহীন আচরণ সৃষ্টিতে।

একদিকে সমাজের দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষকদের স্ট্যাটিক আচরণে দেখার মানসিকতা, অন্যদিকে শিক্ষক সমাজের মধ্যে আদর্শ আচরণ গুলিকে ডায়নামিক ভাবে নেওয়ার প্রবণতা প্রচলনের ঠোক্কর সম্মান, শ্রদ্ধা, মূল্যবোধ, ভক্তি, আদর্শ ইত্যাদিকে বেশ বিতর্কের সম্মুখীন হতে হয়। এর সঙ্গে আছে প্রাতিষ্ঠানিক সরকারী শিক্ষক সমাজের অর্থনৈতিক স্বাচ্ছল্য। শিক্ষকদের মুখ থেকে শোনা যায়- বাম সরকার শিক্ষকদের সম্মান দিয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক শক্তি দিয়েছে‌। বেশ ভালো কথা। কিন্তু এর বিপরীত প্রকাশ পাওয়া যায় সমাজ থেকে। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির সাথে তারা তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। কিংবা সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি হলেও সমাজ শিক্ষকদের বলে- আপনাদের তো অনেক বেতন বাড়ল। কেউ কেউ বলেন- শিক্ষকতা খুব ভালো পেশা। খাটনি নেই অথচ অনেক বেতন।

এ অনুভব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকেও আসে-

শুধু মানবসমাজকে দোষ দিয়ে দিলে হবে না। সরকারি ঘোষণা এবং রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ছোট্ট বার্তা সারা সমাজে ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। মাননীয়/মাননীয় মন্ত্রীদের মুখ থেকে শিক্ষকদের প্রতি ‘ঘেউ ঘেউ’ আচরণকারী সম্ভাষণ একেবারে তৃণমূল স্তরে পর্যন্ত প্রভাবিত। ফলস্বরূপ সরকারি প্রকল্পের প্রাপ্ত সেবায় শিক্ষকদের দ্বারা বিন্দু সম সমস্যা ঘটলে শুধু একজন শিক্ষক নয় বর্তমান সমগ্র শিক্ষকদের উপর দিয়ে যায়। নাম্বার কেন কম পেল? শিক্ষক ঘেরাও। বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, পূজা কার্যাদির জন্য আদায়কারীর চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিতেই হবে(অবশ্যই চাঁদা দিতে হবে, কিন্তু পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে)। আপনারা অনেক বেতন পান। না হলে শিক্ষক ঘেরাও। এই পরিস্থিতিতে বাজারে রাস্তাঘাটে শিক্ষকরা নিজেকে শিক্ষক পরিচয় দিতেও ভয় পান। এই আমাদের বর্তমান শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসার ও সম্মানের অবস্থা।

এর কারণ প্রসঙ্গে বলা যায়- সমাজের এক বিরাট অংশ অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা অস্বাচ্ছন্দ থেকে বঞ্চিত বেকারত্ব, সরকারি প্রকল্পের সম্পূর্ণ স্বচ্ছ সদ্ব্যবহার অভাব ইত্যাদি। তাই অর্থের উপর ভর করে অসামঞ্জস্য জীবনযাপন সমাজকে কমপক্ষে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছে। যথা- সচ্ছল ও অসচ্ছল। এই অবস্থায় নিপীড়িত মানুষকে সামান্য উসকে দিলেই আগুনে ঘি পড়ার মত অবস্থা। সমস্ত দোষ শিক্ষকদেরই। তাহলে ত্রুটি কোথায়? সমাজের আপামর জনগণ, সরকার শিক্ষকসহ, সরকারি কর্মচারী, না’কি অন্য কিছু?
জানতে এখানে ক্লিক করুন।

বর্তমান শিক্ষকদের আচরণ-

শিক্ষকরা কি ধোয়া তুলসী পাতা? সমাজ সেটা কখনোই বলে না। খবরে বর্তমান শিক্ষকদের কিছু কিছু ঘটনা আসে। পরীক্ষার পূর্বে ছাত্রের খাতায় শিক্ষকদেরই উত্তর লিখে দেওয়া, মিড ডে মিলের হিসাবের গড়মিল, শ্লীলতাহানি, উদ্দাম নৃত্য ইত্যাদি ইত্যাদি। 

সমাজের এ দৃশ্য বা ঘটনাগুলি ভালো লাগেনা বলে সমালোচনা(সমালোচনা ইতিবাচক ও নেতিবাচক সব দিকগুলো নিয়ে আলোচিত হয় না, হয় নিন্দা। 

সমগ্র শিক্ষক সমাজ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে পড়ে। শিক্ষক মহলও এ নিয়ে বিভিন্ন দলে বিভক্ত। কেউ বলে- বেশ করেছে। কেউ বলে- এটা ঠিক না। কেউ বলে- না ঠিক আছে, কিন্তু আরেকটু শালীনতা থাকলে ভাল হত।

ভদ্রতা, শালীনতা বিষয়টি আপেক্ষিক। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়। উদাহরণ দেওয়া যাক। কোন কনভেন্ট বিদ্যালয় ছাত্রীদের ইউনিফর্ম গ্রাম বাংলা কোন স্থানীয় ভাষার বিদ্যালয় প্রচলন হলে, গেল গেল রব উঠে যাবে। শ্লীলতা, শালীনতা নিয়ে এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। সেরকম শিক্ষকদের পোশাক নিয়ে নানান মতবিরোধ। কেউ বলে ধুতি পাঞ্জাবি, কেউ বলে সাধারণ প্যান্ট-শার্ট, কেউ বলে শাড়ী। অন্যরা সালোয়ার কামিজে আস্থা রাখেন। জনসমাজ থেকেও কখনো কখনো মন্তব্য আসে- এখন আর ধুতি-পাঞ্জাবি পড়া শিক্ষক নেই। আর সেরকম পড়ানা নেই।

অর্থাৎ সেকাল-একালের শিক্ষক আচরণ শ্রদ্ধা মান-সম্মানের এবং শিক্ষক দিবস উদযাপনও পরিবর্তনেও তার তুলনা অনাকাঙ্ক্ষিত নয়। শিক্ষক সমাজও একাল সেকালের আলোচনায় সমানভাবে অংশগ্রহণ করে। তারা শ্লীলতা, শালীনতা, ভদ্রতা ইত্যাদি আচরণগুলো নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। এধরনের বিশ্লেষণ একটি কথা বলা যায় শিক্ষকসমাজ 100% প্রগতিশীল নয়। এখানেও আসে প্রগতিশীলতার বৈশিষ্ট্য। কি সেই প্রগতিশীলতা?

প্রগতিশীল শব্দটিকেই বিশ্লেষণ করা হলে বলা যেতে পারে- প্রকৃষ্ট রূপে গতিশীলতা। স্থবিরতা নাই। চলমান। ডায়নামিক। কিন্তু কি নিয়ে চলবে? সমস্যা সেখানে। কেউ বলেন- আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ। আরো কত কি। কেউ বলেন- ওগুলোর সাথে নব উৎপাদিত উৎপাদিত উৎকৃষ্ট দ্রব্যাদি সহ মানবকল্যাণে শান্তি আনয়নে বিজ্ঞানচেতনা প্রসূত পারস্পরিক সুসম্পর্ক। প্রবাহের জন্য যাকিছু উত্তম, যা কিছু সত্য- তাই প্রগতিশীলতা। ‌

তারই মিলনমেলার নব তারুণ্যের মধ্যমণিতে যারা আছেন তারা হলেন শিক্ষক। সমাজের মহাকাশের মাঝে নীহারিকা হয়ে অবস্থান করছে শিক্ষকসমাজ। যে নীহারিকা জন্ম দেয় হাজার হাজার নক্ষত্ররাজি, শিক্ষকদের অনাদি আলোক রশ্মির উৎস থেকে জন্ম হয় আগামীর সমাজ সচলতার একক গুলি। যাদের সমাহারে তৈরি হয় গোটা সমাজ, গোটা বিশ্ব।

সোশ্যাল মিডিয়া ও শিক্ষক দিবস ২০২২-
আর এই স্বতঃস্ফূর্ততায় সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে(Social media) প্রকাশিত হয় নানা রকম আপডেট. ওয়াল জুড়ে ভরে যায় শ্রদ্ধা, ভক্তি, নানান লেখা, ছবি। কত লাইক, কমেন্টের আশায় বসে থাকা এডমিন।

তবে এ কথাও ভুললে চলবে না, সমাজের প্রতিটি বিন্দুতে বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে যারা বসে আছেন, তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভূমিকাকে। ভোলা যাবে না বা অস্বীকার করা যাবেনা। শিক্ষক, রিক্সাওয়ালা, অটোচালক, সরকারি কর্মচারী, কৃষক, ব্যবসাসহ শ্রমজীবী শ্রমিক শ্রেণী‌। ছাত্র- +শিক্ষক-অভিভাবক সমাজ সম্পর্কের প্রবহমান স্বাভাবিক স্রোত কোন কারণে বাধাপ্রাপ্ত হলে শুধু শিক্ষক নয়, শুধু ছাত্র-ছাত্রী নয়, সমগ্র সমাজের ছড়িয়ে থাকা সমস্ত শ্রেনীর উপরে তার ফলাফল ছড়িয়ে পড়বে। তার সূচনালগ্নে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। দাঁড়িয়ে আছি বলার থেকেও আরো সত্য প্রবহমান স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। কে বাধা দিচ্ছে তাও দেখার চোখ সবার থাকেনা। চক্ষুদান করতে হয়। সেই কাজটাও একজন শিক্ষকই পারেন।

মনে আছে সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে’র সেই শিক্ষক উদয়ন পন্ডিতের কথা। সমাজকে শিক্ষিত করার ফলাফল তিনি রাজার কাছ থেকে পেলেন ঠিকই। কিন্তু রাজার পরিণতির কথাও আমরা ভুলিনি।

শেষ কথা, তবু শেষ নয়-
গোটা সমাজে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত শ্রেণীর  মানুষেরকাছে অনুরোধ- সুসম্পর্কের ধারাবাহিক স্রোতে বাধা প্রদানকারী শক্তিকে সনাক্ত করুন। সজাগ হোন। তাছাড়া সমাজ আগামীতে স্রোত হীন বালুচর মরুভূমি হতে বেশি সময় নেবে না। ধন্যবাদ। কমেন্ট করুন।

আরো পড়ুন-
সংরক্ষণের ভালো-মন্দ,

Help Your Family and Friends:

Leave a Comment