Immediate Care of Newborn in Bengali | Certainly take Care | আঁতুড়ঘরে 1 মাস |

সদ্যজাত শিশুর যত্ন তৎক্ষণাৎ (Immediate Care of Newborn Baby) নেওয়র জন্য আঁতুড় ঘরে নিক্ষেপ- কতটা যুক্তযুক্ত? একটি পরিবারে নতুন ছোট্ট সদস্য, তাতে পরিবারে আনন্দের স্রোত বয়ে যায়। পরিবারে যারা প্রথম বাবা-মা হন, ঠাকুমা দাদু হন সবার খুশির সীমা থাকে না। পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে মিঠাই বিতরণ হয়। অথচ ১ মাস ধরে আঁতুড় ঘরে অচ্ছুতের মত বন্দী করে রাখা হয়। শুধু তাকে নয়, মা’কেও। সব্ জায়গায় হয়তো নয় কিন্তু গ্রামবাংলায় এই প্রথা এখনো আছে জঞ্জালের মতো।

সেই ছোট নবজাতক সদস্য হাসপাতাল থেকে বাড়ি এলে তাকে তার মায়ের কোলে চড়ে বাড়ির সব থেকে ছোট ঘরটিতে আশ্রয় নিতে হয়। সেই ঘরে অন্য ব্যক্তির প্রবেশ নিষেধ থাকে, একেই বলে আঁতুড়ঘর। মা ও নবজাতকের 21-30 দিনের অচ্ছুৎ অজ্ঞাতবাস পালন করতে হয়। অন্য কোন ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করলে সেই ব্যক্তিকে স্নান করতে হবে। সদ্যোজাত মায়ের থালা-বাসন আলাদা, জামাকাপড় আলাদা। সেই থালা-বাসন পরিবারের কেউ ছোঁবে না। দূর থেকে খাবার দেওয়া হয় লক্ষ্য রেখে ,যেন স্পর্শ না হয়ে যায়।

যত্নের নামে কু-প্রথা | Superstition in the name of Immediate Care of Newborn Baby –

শুধু গ্রামাঞ্চল নয়। শহর তথা মফ:স্বলের অনেক বাড়িতেই এই কু’প্রথা এখনও প্রচলিত। আঁতুড়ঘরটা হয় স্যাঁতস্যাঁতে, শিশুকে নিয়ে মা’কে মেঝেতে মাদুর পেতে শুতে হয়। শীতে তো অবস্থা খুবই খারাপ।

এই আধুনিক যুগে ,ডিজিটাল দুনিয়ায় এখনো আঁতুড়ঘর বর্তমান। বিশেষ করে গ্রামগুলোতে। মানুষের পোশাক পরার ধরন পাল্টেছে, হাতে স্মার্টফোন এসেছে, কিন্তু মনের সেই অন্ধ সংস্কার বদলায়নি।

আঁতুড়ঘর নিয়ে ধারণা-

যেসব জায়গায় আঁতুড়ঘর এখনো বিদ্যমান, সেই সব জায়গায় মানুষের ধারণা যে, শিশু তাদের বাড়িতে এসেছে সে পূর্বজন্মে অন্যজাতের ছিল। অন্য বংশের ছিল। তাকে শুদ্ধ করতে হবে ২১-৩০ দিন আলাদা রেখে। তারপর নখ কেটে, স্নান করে আগের জন্মের জাত ঘুচবে, তবেই সে এই জাতের ও বংশের হবে। আশ্চর্য এই ধারণার উদ্ভাবন এবং বর্তমান প্রয়োগ। কিছু কিছু মানুষের ধারণা আঁতুড় ঘরে শিশুকে না রাখলে, নিয়ম পালন না করলে তা চরম পাপ হবে। অকল্যাণ হবে।

যারা নবজাতকের জন্মের পর আনন্দ করে, মিষ্টি বিতরণ করে তারাই সেই শিশুকে ও তার মা’কে বাড়িতে এনে প্রথমেই একটা ছোট্ট ঘরে বন্দী করে রাখে। যে মা নবজাতককে পৃথিবীর আলো দেখালো সেই মায়ের শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। তার শারীরিক  যত্নের প্রয়োজন। আর শিশুটিরও আলাদা করে অনেক যত্ন, ভালবাসার প্রয়োজন। কিন্তু নিয়ম যে আগে পালন করতেই হবে। না হলে যে বেজাত ঢুকবে  ঘরে।

শিশু যখন পৃথিবীর পরিবেশে আসে, তার আলাদা করে অনেক যত্নের প্রয়োজন। সে প্রয়োজন হল- Immediate Care of Newborn Baby। সে মায়ের গর্ভে অন্য পরিবেশে ছিল, তার ত্বক, চোখ, শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের খুব যত্নের প্রয়োজন হয়। যাতে সে ধীরে ধীরে পৃথিবীর পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। অথচ যত্নের নামে, Immediate Care of Newborn Baby-র নামে কই বীভৎস প্রথা আবহমান কাল ধরে চলে আসছে আমাদের বাংলায়।

একটি প্রাণের জন্ম হয় উপযুক্ত উপাদান ,পরিবেশের উপস্থিতিতে, যা প্রাণের জন্মের জন্য প্রয়োজন, সেখানে পূর্বজন্ম কি করে আসে জানা নেই।

মানুষ যতই শিক্ষিত হোক না কেন, খুব কম ব্যক্তি আছে যারা প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করে অন্তর থেকে। আর তার জীবনে প্রয়োগ করে। বাকি সব সংস্কারাচ্ছন্ন, কুসংস্কারাচ্ছন্ন, অর্ধশিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যায় কুহকের দিকে। একেই কি বলে প্রকৃত শিক্ষা?

এই আতুর ঘর বিষয়টি এখনও চলে আসছে বংশ-পরম্পরায়। শিশুর জন্ম দেওয়ার পর আঁতুড়ঘরের কষ্ট পেতে হয়েছে যে মা’কে, সেও কিন্তু পরবর্তীকালে সব ভুলে গেছে এবং এই আচরণটি পরবর্তী প্রজন্মকে দিতে বাধ্য করেছে।

What should be Immediate Care of Newborn Baby? | প্রকৃত শিশুর যত্ন কি হওয়া উচিৎ?

প্রথমেই সদ্যজাত শিশুর প্রতি যা করণীয় তা হল শিশুর স্বাস্থ্য ও খাদ্য। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তো বটেই, যে কোন সময়েই শিশুর স্বাস্থ্যবিধির জন্য সকলকেই সচেতন থাকতে হবে। যে কেউ শিশুকে কলে নিন, কিন্তু অবশ্যই স্যাবিটাইজার নিয়ে বাচ্চাকে কোলে তুলুন। আপনার শরীরের পোশাকের সঙ্গে তাকে স্পর্শ না করানোই ভালো। গরম জল ব্যাবহার করুন। আলো বাতাসের সঙ্গে থাকুন, বাচ্চাকেও প্রকৃতির সঙ্গে রাখুন। প্রকৃতির সঙ্গে যত বেশি সম্পর্ক ততবেশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
শিশু জন্মের পর থেকে ৬ মাস ব্যস পর্যন্ত অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার নয়। শিশুর কৌটোর খবারের প্রতি নয়, কৌটোর খাবার কক্ষনই নয়। বরং মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া জরুরী।

সি এম সি ভেল্লোর কি প্রকৃত অর্থেই ভারতের এক অন্যতম হাসপাতাল?
ক্রিটিক্যাল অপারেশনের জন্য কেমনভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন?
Why Advice of Doctor entertains going to Pathology Lab | কেন ডাক্তারের পরামর্শে আমরা Pathology Lab- এ যাই?

সমাজ সংস্কারকরা কি ব্যার্থ?

বাংলা তথা ভারতবর্ষ সহ সারা পৃথিবীতে কত সমাজ সংস্কারক এসেছেন। তারা তাদের কাজ করে গেছেন। সমাজ শুদ্ধ করার হাজার চেষ্টা করেছেন। কখনো সফল হননি তা নয়, কিন্তু সফলতার ন্যূনতম ফলাফল আমরা কতটা বহন করেছি- প্রশ্ন জাগে।

প্রশ্ন জাগে মানসিক শুদ্ধিকরণের বিষয়ে। কতটা মনকে শুদ্ধি করতে পেরেছি আমরা। আমরা বক্তৃতার সময় উচ্চকণ্ঠে মঞ্চ মাতাই, লেখার সময় স্বর্ণাক্ষরে লিখি। কিন্তু বাস্তবতায়, ব্যবহারে, জীবন যাপনে আমাদের চলার পথে শুদ্ধ সংস্কারের ছিটেফোটাও দাগ কাটে না।

শুদ্ধ সংস্কারি মানুষের সত্তা জরা রোগে জরাজীর্ণ; চেতনই আমরা অপমান করি সুন্দরের, শুদ্ধতার, সংস্কারের। যা কোন ভুল তো অবশ্যই এবং অন্যায়ও। যে অন্যায় মার্জনা কখনোই বাঞ্ছনীয় নয়। বরং তার প্রকৃত বাস্তব শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন। আর এই শুদ্ধিকরণ চিত্তের সহজাত স্বতঃস্ফূর্ত আচরণের পরিবর্তনেই সম্ভব। আপনি আমি কেউই কখনোই এই মানুষের আচরণ ব্যবহারকে পরিবর্তন করতে পারিনা।

চিন্তনের গভীরতার অবগাহনে শুদ্ধি হোক মানব মন। শুভ্র হোক চিত্ত, চিন্তনের কুহক কালো মানসিকতা কড়াল প্রথা থেকে মুক্তি পাক নবজাতক।
আপনারা এ বিষয়ে ইনবক্সে মতামত জানান। ধন্যবাদ।

Help Your Family and Friends:

Leave a Comment