What is Artificial Intelligence in Bengali- শিক্ষাক্ষেত্রে 10টি উল্লেখযোগ্য সুবিধা

Artificial Intelligence in Bengali: শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা এখানে এই নিবন্ধে বর্ণনা করা হচ্ছে। যদিও ডিজিটাল প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপযোগিতার ধারণা নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। তথাপি এই নিবন্ধে আমরা শিক্ষা ব্যবস্থায় এআই এর প্রকৃত সুবিধার দিকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।

শুধু একটি আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট নয়, গোটা বিশ্ব, প্রতিটি দেশ কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারস্থ হচ্ছেন। একজন ব্যক্তি হিসাবে, যে কেউ এআই প্রযুক্তির মূল বৈশিষ্ট্য, সুবিধা এবং সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করতে পারে, শিক্ষণ এবং শেখার অগ্রগতির মৌলিক প্রক্রিয়াটিকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবার জন্য।

Artificial Intelligence in Bengali | আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি

Artificial Intelligence in Bengali

Artificial Intelligence ের বাংলা হল কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। জৈবিক বুদ্ধির বিকল্প হিসাবে প্রযুক্তির প্রয়োগে কৃত্তিম বুদ্ধির জন্ম। জন্মদাতা সেই মানুষই। ডিজিটাল প্রযুক্তির এক উন্নত প্রয়োগ সাধনে বিশেষত একই কাজ বার বার করার কাজে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে ব্যবহার করা হয়। সফটওয়ার অ্যালগোরিথ্ম এমনভাবে কাজ করে য মানুষের কাজকে অতি সহজ করে তোলে। রোবটের কাজও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-র কাজ। নিচের উদাহরণগুলির দ্বারা বিষয়টি আরো সহজভাবে বোঝানো যেতে পারে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার

সকালের এলার্ম থেকে শুরু করে রাত্রে স্বয়ংক্রিয় মিষ্টি সঙ্গীত বা আপনি ঘুমিয়ে পড়ার পর টিভি বন্ধ হয়ে যাওয়া সবই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স- এর কাজ। আপনি ব্রাউজারে কোনো দ্রব্য কেনার জন্য সার্চ করলেন। পরে ফেসবুক খুললে দেখেন ঐ দ্রব্যটি বা ঐ জাতীয় দ্রব্য ফেসবুকে দেখাচ্ছে। আপনি কোনো খবর দেখছেন, পরে ঐ জাতীয় খবর গুগুল আপনাকে রেকমেনড করছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স- এর কাজ। স্মার্ট ওয়াচ, ম্যাপ ধরে নির্দিষ্ট স্থানে পৌছান কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাই করছে।

বর্তমানে অংক কষা থেকে আপনার কাঙ্খিত রচনা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অতি সহজে অস সত্বর তৈরি করে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে চ্যাট জিপিটি, গুগুল ব্র্যাড, বিং চ্যাট অসাধারণ কৃতিত্ব দেখাচ্ছে। এমনকি সাধারণ ছোটখাটো প্রোগ্রাম বানিয়ে দিচ্ছে।

এবার আসুন দেখা যাক শিক্ষাক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর অবদান কী। সত্যি কী এর প্রয়োজন রয়েছে, না’কি আমাদের ভেলকির মধ্যে ডুবিয়ে দিচ্ছে।

শিক্ষায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার

Artificial Intelligence in Bengali
  • শিক্ষা পদ্ধতিতে নিজস্বকরন-

বিশ্বের প্রয়োজনে আরও ভাল অগ্রগতির জন্য, বর্তমানে শিক্ষাবিদরা সাধারণীকরণের পরিবর্তে ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষার উপর জোর দেন। প্রতিটি শিক্ষার্থী অনন্য এবং ভবিষ্যতে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের বিভিন্ন উপলব্ধি রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী এক-আকারের-ফিট-এর ধারণাটি শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা, চাপ, শেখার শৈলী এবং আগ্রহকে বিশ্লেষণ করতে পারে না। এআই উত্পন্ন ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষণ এবং শেখার প্রক্রিয়াগুলি প্রতিটি শিক্ষার্থীর সমস্ত প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয়তাগুলি বোঝাতে পারে, বিশেষত শেখার অসুবিধাযুক্ত শিশুদের প্রয়োজনীয়তা।

  • শিক্ষাদান ব্যবস্থার উন্নতি-

ডিজিটাল এবং তথ্য প্রযুক্তি উদীয়মান এআইয়ের আগে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেছে। কিন্তু বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পাঠদান প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করছে, যাকে বলা হচ্ছে এর ইন্টেলিজেন্ট টিউটরিং সিস্টেম (আইটিএস)। আইটিএস প্রয়োগ, দুর্বলতা, শক্তি এবং অনন্য শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা সহজ, যাতে তারা তাদের মানসিক ক্ষমতা অনুযায়ী আরও ভাল শিখন পদ্ধতি উন্নত করতে পারে। এছাড়াও, আইটিএস সংশোধন এবং ভুলগুলি বাছাই করতে এবং প্রতিক্রিয়া আঁকতে সহায়তা করে। স্ব-দক্ষতা এবং একাডেমিক উন্নতি বাড়ানোর পাশাপাশি, আইটিএস শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত এবং অনুপ্রাণিত করতে পারে।

  • শিক্ষায় বিভিন্ন অসুবিধা সমাধান-

শিক্ষা বিভ্রান্তি, একাকীত্ব এবং হতাশায় ভরা কষ্টের যাত্রার একটি প্রক্রিয়া। নগদে, মানব শিক্ষকদের ব্যর্থতায়, এআই প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের ট্র্যাক করতে এবং তাদের সঠিক পথে রাখতে চালিত করে। এআই শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার সাহায্যে বিশ্লেষণ করে এবং অসুবিধাগুলি খুঁজে বের করার পরে, তাদের অগ্রগতির দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যক্তিগতকৃত সহায়তার সমাধান এবং উন্নত করার জন্য প্রস্তুত করা।

  • আই কিউ টেস্ট

কৃত্রিম বুধহীমত্তার দ্বারা অতি সহজে শিক্ষার্থীদের আই কিউ পরীক্ষা করা সম্ভব। যে কাজটি করতে একজন মনোবিদের দীর্ঘ সময় লাগে ও পরিশ্রম করতে হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অতি দ্রুততার সাথে শিক্ষার্থীদের আই ইউ পরীক্ষার মাধ্যমে শ্রেণীকরণ করতে পারে। যাতে সেই শিক্ষার্থীরা কোন ক্ষেত্রে নিজেদের সাফল্যের শিখরে প্রতিষ্ঠা করতে পারে তার আভাস আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিতে পায়ে।

  • তথ্য সংগ্রহের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া-

শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ও বিশাল তথ্য সংগ্রহের পর নিম্ন, মধ্যম ও উচ্চতর গ্রেড অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বাছাইয়ের কাজে এআই ব্যবহার করা যাবে। কখনও কখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মানব শিক্ষক এবং শিক্ষাবিদদের দ্বারা উপেক্ষা করা যেতে পারে। এআই সহজেই সেই ডেটা পর্যবেক্ষণ করতে পারে, যা মানব পর্যবেক্ষকদের দ্বারা অলক্ষিত। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্কুলগুলির তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষ শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য অতিরিক্ত প্রয়োজনীয়তা তৈরি করতে পারে।

  • শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবক যোগাযোগ ও সহযোগিতা-

এআই শিক্ষা ব্যবস্থায় পিতামাতা, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সাথে একসাথে দেখা করার সুযোগ দেয়। শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শুধু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাই অপরিহার্য নন, অভিভাবকরাও এই পুরো প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এআই উত্পন্ন ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা পিতামাতাদের তাদের বাচ্চাদের অপর্যাপ্ততা এবং অগ্রগতি সম্পর্কে সতর্ক করে। সহযোগিতা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি একটি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ এবং কার্যকর করে তোলে।

  • স্বয়ংক্রিয় প্রশাসনিক কাজ-

এআই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শিক্ষা বিভাগের প্রশাসনিক কাজগুলিতে প্রভাব ফেলে। ম্যানুয়াল প্রশাসনিক কাজগুলি মানসিক চাপ এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। শিক্ষা বিভাগে কর্মী নিয়োগ থেকে শুরু করে হাজিরা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুত ও অন্যান্য প্রশাসনিক তথ্যসহ প্রতিটি কাজ সহজেই এআই প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত হতে পারে। শীর্ষ পর্যায়ে শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতিতে পৌঁছাতে সঠিক সময় ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদের সদ্ব্যবহার উন্নত করা যেতে পারে।

  • শিক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের অন্তর্ভুক্তিকরণ-

অন্তর্ভুক্তি ও সহজলভ্যতার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য এআই বড় ভূমিকা রাখতে পারে। শিক্ষা সম্পর্কে ভীত শিক্ষার্থী, দরিদ্র অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিভিন্ন শিক্ষার্থী এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের এআই অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থায় অ্যাক্সেস এবং অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। আনন্দ ছাড়া গতানুগতিক, স্বাভাবিক পাঠদান পদ্ধতির কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থী, এআই পরিচালিত প্রযুক্তি সিস্টেমগুলি উপভোগ্য শিক্ষণ শ্রেণিকক্ষকে আকর্ষণ করতে পারে।বক্তৃতা এবং অনুবাদ পদ্ধতির উচ্চারণ শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষণ শেখার প্রক্রিয়াটিকে ব্যবহারকারী বান্ধব করে তোলে।

  • শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী-

এআই শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ করতে পারে যে তারা কোন ক্ষেত্র এবং দিকনির্দেশনায় তাদের ক্যারিয়ারকে সর্বোত্তম স্তরে উন্নত করতে পারে। অনেক সময় শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা নিজেরাই এ বিষয়ে বিচার করতে পারেন না। প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের আইকিউ স্তর খুঁজে পেতে এবং মানব সম্পদের সর্বাধিক উপযোগিতার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য তাদের পুনর্নির্দেশ করতে সহায়তা করে।

  • গেম খেলার মাধ্যমে শেখা-

চক ও টক লার্নিং পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণের তেমন সম্ভাবনা নেই। যদিও শিক্ষা প্রক্রিয়ায় অনেক শিক্ষণ শিখন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এআই প্রযুক্তির টিএলএম ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) এর মতো শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটিয়েছে। শিক্ষার্থীরা যে কোনো ধারার যেকোনো পাঠের জটিলতা সহজেই বুঝতে পারে। সেটা হতে পারে ঐতিহাসিক ঘটনা, ভৌগোলিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর খারাপ দিক

Artificial Intelligence in Bengali

আমরা এআই প্রযুক্তির সম্পৃক্ততার সাথে শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই এবং স্বীকার করি। ভবিষ্যতে এআই প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতিটি শাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে আমাদের অবশ্যই এআইয়ের নেতিবাচক প্রভাবগুলি মনে রাখতে হবে এবং এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে খুব যত্নবান হতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে।

যেমন- মানবকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব, তথ্য গোপনীয়তার নিরাপত্তাহীনতা, নৈতিক বিবেচনা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তার অভাব, পক্ষপাতদুষ্টতা, মানুষের চাকরির স্থানচ্যুতি বিষয়গুলি খুবই উদ্বেগের কারণ হয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Related Post-
10টি অন্ধকার দিক- শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার
শিক্ষার্থীর সফলতা- পরিবার কি ধরনের শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান

শিক্ষার হাল ফিরতে বাধ্য- পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা

উপসংহার-

শিক্ষা ব্যবস্থায় এআই বাস্তবায়ন ফ্যাডের আলোচনা নয়। আমরা ভাবছি আগামী দিনে প্রযুক্তি প্রয়োগের পরিধি তার চেয়ে বিশাল। এটাও সত্য যে, সৎ ইচ্ছা ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো ছাড়া এআই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা যায় না।

অন্যদিকে এটাও মাথায় রাখা যেতে পারে, এআই শুধু শিক্ষা ক্ষেত্রে সমস্যা প্রশমিত করতে এসেছে। এটি তার কাজটি ভাল বা খারাপ করছে কি’না, ভবিষ্যতের ফলাফলগুলি আমাদের শিক্ষণ শেখার প্রক্রিয়াতে এআইয়ের প্রকৃত দায়িত্বের প্রভাব বলে দেবে। তবে আমরা বলতে পারি, মানব সমাজে শিক্ষাকে যথাযথভাবে গ্রহণ করার জন্য এআই প্রযুক্তি এবং মানব ক্রিয়াকলাপের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত।

আশা করি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি(What is Artificial Intelligence in Bengali) নিবন্ধটি থেকে আপনাদের একটি সাধারণ ধারণা তৈরি হয়েছে। ভাল মন্দ মতামতের আশায় রইলাম।

Help Your Family and Friends:

Leave a Comment