মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বীরভূম সফরে আসছেন। সামনেই লোকসভা ভোট। তারই উদ্যোগ ও প্রচার, হয়তো জেলা সাংগাঠনিক রদবদল, কিছুটা প্রশাসনিক কাজের নজরদারি হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এই নিবন্ধে আমাদের আলোচ্য বিষয় সেটা নয়।
আলোচ্য বিষয় হল- তাবর মন্ত্রী বা নেতার কোনো স্থানে গেলে জনসাধারণের কী সুবিধা অসুবিধা সৃষ্টি হয় আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাহলে কি তার কোথায় যাবেন না? তাও হতে পারে না। আসুন দেখা যাক। সবার শেষে আপনাদের মতামতের আশায় থাকবো।
Disclaimer- নিবন্ধটি সম্পূর্ণই শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে প্রকাশিত। কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলকে হেয় বা ছোট প্রতিপন্ন করা বা অপমান করা উদ্দেশ্য নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি’র বীরভূম সফরে জনসাধারণের সুবিধা অসুবিধাগুলি কেবলই মমতা ব্যানর্জি’র ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তা নয়। জনসাধারণের সুবিধা অসুবিধা যেকোনো নট মন্ত্রীদের আগমনের ক্ষেত্রে একইভাবে ঘটমান। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম সফর করছেন এবং তিনি বর্তমানে কেবল পশ্চিমবঙ্গেই নন, সারা ভারতের একজন প্রভাবশালী নেত্রী, তাই প্রসঙ্গক্রমে তার নামটি স্বাভাবিকতায় এসেছে। |
মমতা ব্যানার্জি বীরভূম কেন আসছেন
খবর অনুযায়ী শনিবার দিন মমতা ব্যানার্জি বীরভূম সফর- এর সূচনা করবেন সড়ক পথে বোলপুর সর মাধ্যমে। সেখানে সাংগঠনিক কিছু কাজ করার কথা। তারপরদিন অর্থাৎ রবিবার সিউড়ির চাঁদমারি মাঠে জনসভা করবেন তিনি।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফর জনসাধারণের সুবিধা অসুবিধা-
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফর কিছুটা হলেও সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু তার অমূল্য সময়ের সদ্ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এই সফরকে স্বল্প সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে।
মমতা ব্যানার্জি বীরভূম সফর ও জনসাধারণের অসুবিধা
পরিবহন ব্যবস্থা- প্রশাসনিক কাজ ও তৎপরতায় সাধারণ মানুষকে অনেক অনেক অসুবিধা সম্মুখীন হতে হয়। যেমন- অনেক বাস তুলে নেওয়ার জন্য নিত্য যাতায়াতকারী মানুষজন ঠিক সময়ে তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারেনা। ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যে অঞ্চলে তিনি আগমন করেন, সেখানকার রাস্তাঘাটে প্রচন্ড যানজটে সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা সময়মত স্টেশনে পৌছতে অসুবিধায় পড়তে পারেন।
রোগীর হাসপাতলে পৌঁছতে অসুবিধা- কোন অসুস্থ বা মরণাপন্ন রোগী, যার খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাকে ঠিক সময়ে দূরের কোন হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব সম্ভব না হতে পায়ে। প্রশাসিন দিক দিয়ে তৎপরতার সঙ্গে রোগী এম্বুলেন্সকে রাস্তা করে দিলেও নির্বিঘ্নে রোগী হাসপাতালে পৌঁছবে তার নিশ্চয়তা নেই।
বিদ্যুৎ ঘাটতি ও অপচয়– যে এলাকায় সমাবেশ হয় সেখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হয়। বিভিন্ন ধরনের আলো মাইক এর ব্যবস্থা থাকার জন্য এক বিপুল পরিমাণের ইলেকট্রিসিটির অপচয় ঘটে। অন্যদিকে এলাকায় লোডশেডিং সম্ভাবনাকে এড়ানো যায় না।
নোংরা আবর্জনা ও পরিবেশ দূষণ– সমাবেশে প্রচুর লোকের আগমন ঘটে, এই কারণে সমাবেশের শেষে চারিদিকে প্রচুর নোংরা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে যায়। ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও কেউ ডাস্টবিন ব্যবহার করে না বললেই চলে। নোংরার কারণে পরিবেশ দূষণকে এড়ানো যায় না।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি– রাজ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকের সমাগম থাকার জন্য সেখানে যেসব দোকানপাট বসে, সেইসব দোকানগুলোর এবং পাশাপাশি দোকানগুলোতে জিনিসপত্রের দাম অন্তত সেই দিনটার জন্য বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এতে স্থানীয় জনসাধারণের একটু অসুবিধা হয়।
টোটো অটোর ভাড়া বৃদ্ধি- লোকসমগম ও রুটের বাস না থাকার কারণ, অন্যদিকে নিতযযাত্রীয়ের অসুবিধা ও যাতায়াতের চাহিদার টোটো অটোর ভাড়া বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা– নেতা মন্ত্রীদের আশা যাওয়ার আগে পরে এলাকায় রাজনৈতিক অস্থিরতা, টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যায়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রেষারেষি দেখা যায। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে যে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় , সেখানে তার নেতৃত্বাধীন দলটির লোকজন প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত হবে। অপরদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দল এই সমাবেশটাকে টেক্কা দেবার জন্য তাদের মিটিং মিছিল করার পরিকল্পনা করার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই রাজনৈতিক দলগুলির রেষারেষির খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ গুলোর অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফর জনসাধারণের সুবিধা
রাস্তা মেরামত– মুখ্যমন্ত্রী সফরে আসার জন্য যে রাস্তার উপর দিয়ে যান, সেই রাস্তাঘাট গুলোকে ভালো করে মেরামত করা হয়। খারাপ রাস্তাগুলোকে স্মুথ বানানো হয়। ফলস্বরূপ জনসাধারণ অন্তত কিছুদিনের নয় একটু উন্নত রাস্তা দেখতে পান। আপনার বলবেন আমের রাস্তা তো ভাল। কিন্তু লক্ষ্য করে দেখবেন বাম্পগুলো সরিয়ে ফেলা হয়, খানা-খনদতে পিচ দেওয়া হয়। ফলে তিনি যে রাস্তা দিয়ে যান সেই রাস্তার চারপাশের মানুষজন সহ সকলেই একটু সুবিধা পান।
আবর্জনা মুক্ত– এছাড়াও রাস্তায় চারপাশে যেসব আবর্জনা পড়ে থাকে, সেগুলোকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাস্তার চারপাশ গুলোকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়।
সাময়িক মেলা– মুখ্যমন্ত্রী যে জেলাতে সভা করতে আসেন, তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর মানুষকে নিয়ে আসা হয় সমাবেশে ভিড় বাড়ানোর জন্য। সমাবেশে চারদিকে একটা মেলা সৃষ্টি হয়। প্রচুর দোকানপাট বসে, এতে করে কিছু মানুষের রোজগারের একটা পথ খুলে যায়।
গরীবদের উপকার– নেতা-মন্ত্রীরা যে দলের প্রতিনিধি সেই দলের নেতাদের দায়িত্ব থাকে বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজনকে নিয়ে আসার। ওইসব নেতারা জেলাগুলির বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষকে আসা যাওয়া খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা সহ সামান্য সাহায্য়্ করে থাকে। তার সাথে সাথে একদিনের সহ খাবারও জুটে যায়। ফলে গরীব মানুষের সাময়িক উপকারও হয়।
প্যান্ডেল-লাইট-মাইক ব্যবসা– নেতা মন্ত্রীদের জেলা সফরে প্যান্ডেল-লাইট-মাইক ব্যবসায়ীদের অসময়ে অর্থ সমাগমের পথ প্রশস্ত করে। প্যান্ডেল-লাইট-মাইকের বহর অন্যান্য পূজা পার্বণ উত্সবের তুলনায় কোনো অংশে কম নয়। ার সরকারীভাবে এই সমস্ত মালপত্রের যোগান কখনোই সম্ভব হয় না। টাই ব্যবসায়ীদের স্মরণাপন্ন হতেই হয়।