IUI Treatment is a Simple Method for Becoming Mother after 35 | 35এর পরে মা হতে চান? এই বিষয়গুলি জেনে রাখুন |

 35 এর প্র মা হতে চান? কোন সমস্যা নেই। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ের প্রতি অবশ্যই লক্ষ্য রাখা জ্রুরি(Become Mother after 35 | But Remember the Factors)। প্রাথমিকভাবে IUI Treatment মা না হতে পারা মহিলাদের জন্য খুবই কম ব্যায়ের এক উন্নতমানের চিকিৎসা পদ্ধতি। অন্যান্য দেশের মহিলাদের মতো ভারতবর্ষেও মহিলাদের কর্মমুখীনতার প্রবণতা শুরু হয়েছে যেম্ন, তেমনি তা বছর বছর বৃদ্ধিও পাচ্ছে।
শুধু তাই নয় পড়াশুনা, কেরিয়ার আত্মনির্ভরশীলতা শহরাঞ্চল থেকে গ্রামের মহিলাদের মধ্যেও ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। ফল স্বরূপ বিবাহের সময় পিছিয়ে পড়া এক স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বভাবতই মা হবার বয়সও অতিক্রান্ত হবার সামিল। কিন্তু প্রকৃতির অনির্বচনীয় অনুভূতি মা হবার পরম সুখ আনন্দ থেকে কোন মহিলা বঞ্চিত হতে চায়? হোক না সে ৩০-৩৫ বা তার চেয়েও বেশি বয়সে।   দেরিতে বিয়ে, কেরিয়ার বা আর্থিক অস্থিরতার কারণে অনেক মহিলাই এখন ৩০-৩৫ বছর বয়সে সন্তানধারণের পরিকল্পনা করতে বাধ্য হন।

বিশেষজ্ঞদের মতামত-

তবে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে, ৩৫ বছর বা তারপর মা হবার পরিকল্পনা(Plan for Pregnancy) থাকলে, সে ক্ষেত্রে মহিলাদের নানান সমস্যা দিতে পারে, ফার্টিলিটির ওপর বয়সের প্রভাব প্রা অসম্ভব নয়। এ ছাড়াও গর্ভপাত, প্লাসেন্টা প্রিভিয়ায় সমস্যা, সময়ের আগে ডেলিভারি এবং ডাউন সিন্ড্রোমের(Down syndrome) মতো সমস্যার ঝুঁকি থেকে যেতে পারে। তাই যে সমস্ত মহিলারা দেরিতে সন্তানধারণের পরিকল্পনা করছেন বা করতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ মানা উচিৎ। তাছাড়া বিশেষ কিছু বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকারও প্রয়োজনীয়তা র‍্যে

মা হওয়ার সঠিক বয়স(Best age for Becoming Mother)-

মা হওয়ার সঠিক বয়স কি ডাক্তার এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও সকলের মোটামুটি একমত 25-35 বছর পর্যন্ত তাই মা হওয়ার জন্য উপযুক্ত বয়স। যদিও ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার সাথে সাথে একজন মহিলা মা হওয়ার ক্ষমতা অর্জন করে। সেই বয়স 12, 13, 14 যে কোন সময় হতে পারে।
তার মানে এই নয় যে তাকে সেই বয়সেই মা হতে হবে অথবা সেই বয়সেই তার বিয়ে দিতে হবে। শরীর গঠনের সাথে সাথে প্রয়োজন মানসিক গঠন। মানসিক শক্তি সন্তান ধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সংসারের সমস্ত দায়িত্ব পালন করার সাথে সাথে তার সন্তানের দায়িত্ব বহন করতে হয়। অর্থাৎ শিক্ষার সাথে সাথে স্বনির্ভরতা এবং মানসিক শক্তির পরিণতির প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
অন্যদিকে পঁয়ত্রিশ ছত্রিশের পর মানসিক পরিণতির চরম সীমায় পৌঁছালেও শারীরিকভাবে একজন মহিলা ধীরে ধীরে ফার্টিলিটি ক্ষমতাও কমতে থাকে। সেইসঙ্গে নিজের স্বাস্থ্য ও মেনোপজের সময়ের বিষয় সচেতন থাকতে হবে। ৩৫ বছরের পর ডিম্বাণুর গুণগত মান ও ফার্টিলিটি কমতে থাকে, তাই গর্ভধারণের সম্ভাবনাও কমে যায়। তবে তা সত্ত্বেও গর্ভধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে না।
 
একই ধরণের অন্য লেখা-

মহিলাদের প্রতি প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি
সমাজে টি ভি সিরিয়ালের প্রভাব
বয়স্ক মা-বাবাকে অবহেলা- ভয়ানক অপরাধ
একান্নবর্তী পরিবার ও অনু পরিবার এবং সমাজ
ভারতীয় সমাজে নারীর অবস্থান
আঁতুড়ঘরে 1 মাস
বিধবা বিবাহ
ভারতের বিস্ময় কন্যা জাহ্নবী পানোয়ার

সঙ্গীর বয়সকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন-

শুধুমাত্র মহিলাদের বয়সই নয়, সেইসঙ্গে তার সঙ্গীর বয়সকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া দরকার। যৌবন প্রাপ্তির সাথে সাথে মানুষ প্রকারান্তরে প্রৌঢ়ত্ব এবং বার্ধক্যে দিকে পৌঁছায়। এবং বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলির কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

স্বভাবতই পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং ক্ষমতা কমতে থাকবে। তাই কেবলমাত্র মহিলাদের নিজের বয়সকেই মাথায় রাখলে হবে না, সেইসঙ্গে তার সঙ্গীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্বসহকারে নজর দেওয়া প্রয়োজন। গর্ভধারণের জন্য মহিলাদের বয়স যতটা গুরুত্ব বহন করে, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গীর বয়সও। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শুধু মহিলাই নয়, বরং পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতাও কমতে শুরু করে। তবে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার হার কম।

আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন-

কয়েক কয়েক সপ্তাহ স্বাভাবিক যৌন মিলনেই একজন মহিলা গর্ভধারণ হয়ে থাকি। দম্পতির বয়স যদি ৩০ বছর হয় এবং ৬ মাস যৌন মিলন ও চেষ্টা চালিয়েও গর্ভধারণ না ঘটলে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে মনের শক্তি আনার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আমাদের সমাজে অনেক দম্পতি আছে যারা কোনভাবেই নিজের ঔরসজাত সন্তান সুখ পান নি। অর্থাৎ মা-বাবা হতে পারেন নি।

আবার দীর্ঘ বছর চিকিৎসার পর কেউ কেউ সন্তান লাভ করেছেন। অতএব শেষ পরিণতির কথা চিন্তা না করে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সমস্যার সমাধানে লিপ্ত থাকুন, এবং তার সমাধান করার চেষ্টা করতে থাকুন। পরিবার পরিকল্পনার আগেই আপনি ফার্টিলিটি স্ক্রিনিং করাতে পারেন। কোনও সমস্যা থাকলে তা প্রথমেই জানতে পারবেন এবং তার চিকিৎসাও শুরু হয়ে যাবে।

ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট(Fertility Treatment)-

বিভিন্ন ধরনের ফারটিলিটি টেস্ট জানিয়ে দেয় কার কোন ধরনের সমস্যা রয়েছে। সমস্যা কি শুধু পুরুষের? নাকি মহিলার? যত শীঘ্র সমস্যা ধরা পড়বে তার ট্রিটমেন্ট ততো তাড়াতাড়ি শুরু হবে এবং শীঘ্রই তার ফলাফল পাওয়া যাবে। সমস্যা হলো- সমস্যা যদি নির্ধারণ না হয়। অর্থাৎ পুরুষ মহিলার কোন ধরনের সমস্যা ধরা পড়ছে না। সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরও ঘনীভূত হতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ফার্টিলিটি স্পেশালিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যাকে চিহ্নিত করন করা এবং তার চিকিৎসায় নেমে পড়া।

পুরুষের সমস্যা-

পুরুষদের মূলত স্পার্ম জনিত সমস্য’ই সর্বাধিক। স্পার্ম জনিত সমস্যা বলতে- হয় স্পার্ম কাউন্ট কম অথবা স্পার্ম তৈরি না হওয়া। বীর্য বা সিমেন আছে, কিন্তু স্পার্মের সংখ্যা কম অথবা স্পার্ম নেই। কখনো কখনো দেখা যায় স্পাম গুলি খুবই দুর্বল অথবা লেজবিহীন। তারা গমনে অক্ষম।

মহিলাদের সমস্যা-

মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। যেমন সঠিকভাবে ডিম তৈরি না হওয়া অথবা অপুষ্ট ডিম্বাণু। ফ্যালোপিয়ান টিউবের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়া অথবা ইউটেরাসে সঠিক ভাবে বেডিং না থাকা ইত্যাদি নানান কারণ। কখনো কখনো প্রজননতন্ত্রের কোন জায়গায় সিস্ট ইত্যাদি উপস্থিতির কারণেও গর্ভধারণ সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবে যাই হোক না কেন, স্বাভাবিক যৌন মিলনের 6 মাস বা একবছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্তই জরুরী। ৩৫ বছরের পর প্রেগনেন্সি প্ল্যান করে থাকলে, আগেভাগে জেনে রাখা দরকার যে, ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বয়সের সমস্ত সমস্যা দূর করা যায় না। তবে তাড়াতাড়ি সমস্যা ধরা পড়ে গেলে এই চিকিৎসা অধিক সফল হয়। 

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন প্রণালী-

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ফলে আপনার ফার্টিলিটি সহজে নষ্ট হবে না। ৩৫ বছরের বেশি বয়সি মহিলারা নিজের ডায়েট ও স্বাস্থ্যের ওপর বিশেষ নজর দিন। এর জন্য কোনও নিউট্রিশানিস্টের পরামর্শও নিতে পারেন। এ ছাড়াও নিয়মিত এক্সারসাইজ, পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর খাবার-দাবার, পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। অন্যদিকে ভুলেও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়বেন না, চিনি, ক্যাফিন, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকবেন।

কৃত্রিম প্রজনন-

স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণ না হলে ইনফার্টিলিটি স্পেশালিস্টদের সাহায্য নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন কৃত্রিম প্রজননে যাওয়া যায়। যেমন

আই ইউ আই(IUI Treatment)-

আই ইউ আই- এর সম্পূর্ণ নাম Intrauterine insemination. যোনির যে জায়গায় ইন্সেমিনেশন হয় সেই স্থান থেকে ফ্যালোপিয়ান টিউবে প্রবেশ পথ সংকীর্ণ থাকলে ফার্মগুলো সেই সরু রাস্তা অনেক সময় অতিক্রম করতে পারে না। অথবা দুর্বল বা ক্ষমতাহীন হলে রাস্তা অতিক্রম করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এক্ষেত্রে IUI পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। যেদিন ইন্সেমিনেশন হবে সেদিনই সঙ্গী বা হাজবেন্ডের স্পার্ম  আগে থেকে সংগ্রহ করা হয়। সিমেন সহ স্পার্ম ক্যাথিটারে মধ্যে সংগ্রহ করে ক্যাথীটার যোনির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে সিমেন ইঞ্জেক্ট করে দেওয়া হয় এবং পরের পিরিওড পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আই ইউ আই এর(IUI) দিন লাস্ট পিরিয়ডের 10 থেকে 16-17 দিনের মধ্যে যেদিন ওভুলেশন হবে বা হবার সম্ভাবনা থাকে তার আগেরদিন IUI করা হয়ে থাকে। ওভুলেশন সম্ভাবনার দিনটি আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে ডিম্বাণুর ব্যাসের দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

উল্লেখ্য ওভুলেশনের দিন এবং হাই ইউ আই এর সফলতা মহিলা থেকে মহিলার মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে।

আইভিএফ(IVF and IVF Cost)-

আই ভি এফের(IVF) সম্পূর্ণ নাম ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন(In vitro fertilization)। যাকে আমরা এক কথায় টেস্টটিউব বলে থাকি। ভারতবর্ষের আইভিএফ(IVF) বা টেস্ট টিউব বেবি সৃষ্টির জনক হলেন ডঃ সুভাষ মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ গবেষণার পর যিনি এক অতি আশ্চর্য এবং অভাবনীয় এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতির সাহায্যে। তার চিকিৎসার ফলে জন্ম দুর্গা(কানুপ্রিয়া আগারওয়াল, জন্ম- 03/10/1978)) ভারতের প্রথম টেস্টটিউব বেবি।

আইভিএফ এর জন্য মহিলাদের ডিম্বাণু  আয়তনে বড় এবং সংখ্যায় বৃদ্ধি করার নিমিত্তে ইনজেকশন প্রয়োগ করা হয়। ডিমের সংখ্যা দুই বা ততোধিক হতে পারে। তবে মহিলা বিশেষে ডিমের সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। ডিমগুলি সংগ্রহ করে কৃত্রিমভবে টেস্টটিউবের মধ্যে স্পার্ম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। পরে নিষিক্ত ডিম্বাণু মহিলার ইউটেরাসে স্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতি একটু খরচ সাপেক্ষ। মোটামুটি 90 হাজার থেকে 3.5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সেজন্য সকল দম্পতির ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

উল্লেখ্য পুরুষ-মহিলাদের শারীরিক গঠন ও স্বাস্থ্যের উপর এই পদ্ধতি সফলতা নির্ভর করে।

ইক্সি(ICSI)-

ICSI র সম্পূর্ণ নাম Intracytoplasmic Sperm Injection. এটি হল আইভিএফ- এর একটি বিশেষ রূপ, যা প্রাথমিকভাবে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিতসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ICSI একটি পরিপক্ক ডিম্বাণুতে সরাসরি কেবলমাত্র একটি পরিপক্ক শুক্রাণু ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। 

নারীর মা হওয়ার অনির্বচনীয় অনুভূতি সকল নারীই গ্রহণ করুন। সুখী হোন, খুশি থাকুন। ধন্যবাদ। 

Leave a Comment